গাড়ির ভাঙ্গা কাঁচও পরিষ্কার করল শিক্ষার্থীরা

বিশেষ প্রতিবেকদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা (২ আগষ্ট ২০১৮) : সড়কে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গত চারদিন ধরে চলমান বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক গাড়ি ভাংচুরের মধ্যেও দেখা গেছে ভিন্ন ভিন্ন চিত্র। রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি আটক ও ভাংচুর চালালেও আবার অ্যাম্বুলেন্সকে যেতে পথও করে দিয়েছেন তারা। আবার ঝাড়ু হাতে রাস্তায় ভাঙ্গা কাঁচ পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে তাদের।

গত ৩ দিনের মত আজকে সকালেও ইউনিফর্ম পরে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। যাত্রাবাড়ি, মতিঝিল, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, ধানমণ্ডি, উত্তরা, তেজগাঁও সহ বিভিন্ন এলাকায় রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চলতে দেননি তারা। এমনকি পুলিশের গাড়িও আটকে দেন শিক্ষার্থীরা।
এমন সময় বেপোরোয়াভাবে চালানোয় কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করেন তারা। সকালে ধানমণ্ডি ২৭ নাম্বারে গাড়ি ভাংচুরের পর ভাঙ্গা কাঁচ পরিষ্কার করতে দেখা গেছে কয়েকজন শিক্ষার্থীদের।

রাস্তাজুড়ে ভাঙ্গা কাঁচ পড়ে থাকায় ঝাড়ু হাতে তা পরিষ্কার করতে নেমে পড়েন ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ক্লাস টেন পড়ুয়া মেরাজ ইসলাম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, এটা তো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি জানান, আমাদের আন্দোলনের কারণে গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। কিন্তু ভাঙ্গা কাঁচের কারণে অন্য গাড়ি চলতে পারছিল না, মানুষের চলাচলের অসুবিধা হচ্ছিল। তাই আমরা কয়েকজন মিলে তা পরিষ্কার করতে নেমে গেছি।

এ সময় স্কুল থেকেই ঝাড়ু নিয়ে এসে তারা রাস্তা পরিষ্কারে নেমে পড়েন বলে জানান মেরাজ। তার সাথে ছিলেন তার বন্ধুরাও। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। ধানমণ্ডি এলাকাতেই থাকেন তারা।

আন্দোলনে গাড়ি ভাংচুর করা উচিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের কাছে রুট পারমিট বা লাইসেন্স নাই সেগুলোই ভাংগছে স্কুলের ছেলেরা। তবে অন্যসব গাড়ি ভাংচুর করেছে বাইরের কিছু ছেলে। তাদেরকে আমরা চিনি না।

আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে বাসা থেকে কীভাবে অনুমতি দিল সেটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আম্মু প্রথমে যেতে দিতে চাননি। তবে আমি বলেছি সেইফ সাইডে থাকব, কোন ভাংচুরে যাব না। তখন আমাকে বাসা থেকে বের হতে দিয়েছে।

আর আমাদের আন্দোলন তো যৌক্তিক। একদিন আমাদের দুইজন ভাইবোনকে মেরে ফেলল বাসচালকরা, অন্যদিন আমাদেরই অন্য কাউকে মারবে। এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না বলে মেরাজ জানান।

এদিকে নৌপরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ, দোষী বাসচালকের ফাঁসি, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিডব্রেকার বসানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ির লাইসেন্স বাতিল সহ নয় দফা দাবিতে গত চার দিন ধরে এ আন্দোলনে ঢাকা গণপরিবহন শূন্য হয়ে পড়ে প্রায়ই। লাখ লাখ মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছতে দেখা গেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ