মর্যাদায় প্রত্যাবাসনের আকুতি নিয়ে কাঁদলেন রোহিঙ্গারা
চট্টগ্রাম অফিস, এবিসিনিউজবিডি,
চট্টগ্রাম (২২ আগস্ট ২০১৮) : গত বছরের কোরবানির সময়টা প্রাণ বাঁচাতে কেটেছে বন-জঙ্গল, পাহাড়, ধানক্ষেত ও নদী সাঁতরিয়ে। কোনোমতে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এসে জড়ো হয়ে করা হয় আশ্রয়ের আকুতি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্রতার মাঝেও লাখো বিপদাপন্নকে টেনে নেন বুকে। এর মাঝে কেটে গেছে একটি বছর।
২২ আগস্ট বুধবার এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পালিত হলো মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ। নিজ দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো কোরবানির ঈদ কেটেছে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত ৩০ ক্যাম্পের প্রায় আট লাখ নতুন আসা রোহিঙ্গার। তাদের সাথে পুরনো সোয়া তিন লাখ রোহিঙ্গা মিলে ১১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৭ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে।
নিজ দেশে মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার রোহিঙ্গারা বুধবার শরণার্থী শিবিরের এক হাজার ২৬৫ মসজিদ ও ৫৬০টি মক্তবে ঈদের নামাজ আদায়ের পর চোখের জলে হারানো স্বজনদের স্মরণ করেছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঈদের নামাজ আদায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমাম ও মুসল্লিরা। মোনাজাতে অংশ নেয়া লাখো রোহিঙ্গা মর্যাদার সাথে নিরাপদ প্রত্যাবাসন কামনা করে স্রষ্টার দরবারে ফরিয়াদ করেন।
গত বছর এই দিনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপরে দেশটির সেনাবাহিনী বর্বর নির্যাতন চালায়। ফলে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা নিজেদের আবাসস্থল ছেড়ে পালাতে থাকেন। এভাবে পালাতে গিয়ে অনেকে হারিয়েছেন বাবা-মা ও কাছের স্বজন। অনেক নারী হয়েছেন ধর্ষণের শিকার। সর্বস্ব হারানো এসব রোহিঙ্গাদের ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চলে।
উখিয়ার মধুরছরা ক্যাম্পের ডাবল ‘ও’ ব্লকের মাঝি সালামত খান বলেন, মিয়ানমারে আমাদের গোয়ালভরা গরু ছিল। প্রতি বছর আমরা একটা গরু কোরবানি দিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে শেয়ার করতাম। কিন্তু এবার নিজের বাপ-দাদার ভিটাতেই অবস্থান নেই। ভিনদেশে প্রাণটা নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি। মিয়ানমারের আগ্রাসনে বাবা-মাসহ অনেককে হারিয়েছি, আজ তাদের বেশি মনে পড়ছে।