মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধই হয়ে গেল
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা (২৬ আগস্ট ২০১৮) : একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার কারণে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধই হয়ে গেল। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ কমিটির বৈঠকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ। ১৪ আগস্ট মাহাথিরের সভাপতিত্বে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মালয়েশিয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে জানিয়েছে।
কুয়ালালামপুর থেকে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ আগস্ট মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে মাহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে বিদেশি শ্রমিক ব্যবস্থাপনাবিষয়ক বিশেষ কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মালয়েশিয়া ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছে।
জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার গতকাল শনিবার বিকেলে এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ২১ আগস্ট আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে।’
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মাহাথির মোহাম্মদ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে সংঘবদ্ধ চক্রের যুক্ততা আর বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। ফলে মালয়েশিয়া যে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, তার আভাস ছিল।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দেশের জন্য যথেষ্ট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ গত কয়েক বছরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের পরের স্থানটি মালয়েশিয়ার। তাই এ বাজার বন্ধ হওয়াটা দেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান আর রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে অনিবার্যভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কুয়ালালামপুর থেকে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ২১ আগস্ট বাংলাদেশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, দুই দেশের সরকারের মধ্যে ২০১৫ সালের ২৬ আগস্টের ঐকমত্য অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ বা বাতিলের অধিকার মালয়েশিয়ার রয়েছে। সে অনুযায়ী মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বাংলাদেশের শ্রমিকদের নিয়োগ বন্ধের এ সিদ্ধান্ত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দুই দেশের মন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।