বর্তমান সিমেই থ্রি জি
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ অক্টোবরের শুরুতেই থ্রি জি সেবা পেতে যাচ্ছেন গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা এবং এজন্য সিম পরিবর্তন করতে হবে না।
থ্রি জির নিলামে অংশ নিয়ে তরঙ্গ বরাদ্দ নেয়ার একদিন বাদে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটিং কোম্পানির কর্মকর্তারা।
রোববার নিলামে অংশ নিয়ে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তির (থ্রি জি) নিলামে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে গ্রামীণফোন।
সংবাদ সম্মেলন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিবেক সুদ বলেন, অক্টোবরের শুরুতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় থ্রি জি সেবা চালু করার পর নভম্বেরে ঢাকা জেলার অন্যান্য অংশ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে তা সম্প্রসারিত হবে।
ডিসেম্বরের মধ্যে সাত বিভাগীয় শহরেই গ্রামীণফোনের থ্রি জি সেবা চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন গ্রামীণফোনের নির্বাহী প্রধান। তিনি আশাবাদী, ২০১৪ সালের মার্চের মধ্যে সব জেলার গ্রাহকরা থ্রি জি সেবা পাবে।
গ্রামীণফোনের চিফ টেকনোলজি অফিসার তানভির মোহাম্মদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান গ্রাহকরা সিম পরিবর্তন না করেই থ্রি জি সুবিধা নিতে পারবেন।
গ্রামীণফোনের বর্তমান গ্রাহকরা থ্রি জি প্যাকেজ নিলেই থ্রি জি গ্রাহকে পরিণত হবেন। ফলে থ্রি জি সেবা পেতে গ্রাহকদের নতুন করে সিম কেনা বা পরিবর্তনের প্রয়োজনও হবে না।
গত বছরের অক্টোবরে রাষ্টায়ত্ত অপারেটর টেলিটক থ্রি জি সেবা চালুর পরপরই এর গ্রাহকদের সিম বন্ধ হয়ে যায়, এতে ভোগান্তিতে পড়ে ঢাকাসহ আশেপাশের টেলিটক গ্রাহকরা।
অবশ্য পরে অকার্যকর ওই সিম গ্রাহকসেবা কেন্দ্র থেকে বিনা খরচে বদলে নেয়ার সুযোগ পায় টে্লিটক গ্রাহকরা।
গ্রামীণফোন অনেক আগে থেকেই থ্রি জি সেবা চালুর কাজ করে আসছে বলে গ্রাহকরা থ্রি জি সেবায় যেতে চাইলে কোনো প্রকারের অসুবিধায় পড়বেন না, বলেন তানভির।
নিলামে বরাদ্দ পাওয়া তরঙ্গের টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। গ্রামীণফোন খুব দ্রুত টাকা জমা দিয়ে কিছু যন্ত্রপাতি আমদানির কিছুদিনের মধ্যেই থ্রি জি সেবা চালু করতে চায় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনের পরপরই তরঙ্গ মূল্যের ৬০ শতাংশ অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে জমা দেয় গ্রামীণফোন।
বিটিআরসি ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বিকালে এবিসি নিউজ বিডিকে এই তথ্য জানান।
নিলাম চলাকালীন সময়ে ডলারের বিনিময় হার অনুযায়ী গ্রামীণফোনকে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। এর ৬০ শতাংশ টাকা জমা দিল তারা।
থ্রি জি নীতিমালা অনুযায়ী নিলামে জয়ী মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রথম কিস্তিতে মোট টাকার ৬০ শতাংশ জমা দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে। বাকি টাকা ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
টাকা জমা দেয়ার ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স দেয়া হবে বলে রোববার নিলাম অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস।
সংবাদ সম্মেলনে বিবেক সুদ বলেন “গ্রামীণফোনে থ্রি জির মাধ্যমে হাই স্পিড ইন্টারনেট, লাইভ টিভি, লাইফস্টাইল অ্যাপলিকেশন, ভিডিও কল, মুভি স্ট্রিম, অন লাইন লাইভ গেমসহ নানা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন গ্রাহকরা।”
এই সেবা প্যাকেজ কী ধরনের হবে বা কী পরিমাণ দাম রাখা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এথনো তা ঠিক করা হয়নি, তবে প্রতিযোগিতামূলক দাম রাখা হবে।”
বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের সাধ্যের মধ্যে বিভিন্ন প্যাকেজ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে বিবেক জানান।
থ্রি জি সেবা চালুর পর গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে বলেও আশাবাদী তিনি। বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৪৬ লাখ।
গ্রামীণফোনের পাশাপাশি দেশের অন্য তিন মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল রোববার নিলামে অংশ নিয়ে পাঁচ মেগাহার্টজ করে থ্রি জি তরঙ্গ কিনেছে।