খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবী বিএনপির

আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮) : সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে: দাবি আদায়ে আগামী ৩ অক্টোবর (বুধবার) সারাদেশের সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি এবং ৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সব মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

৩০ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার’ গঠনসহ বিভিন্ন দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ফখরুল। কারাবন্দি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার জন্য ‘প্রধান অতিথি’র আসন ফাঁকা রাখা হয়। তবে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জনসভায় সরকারের উদ্দেশে বিএনপির পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি ও ১২ দফা লক্ষ্য (অঙ্গীকার) ঘোষণার আগে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দুর্নীতি-লুটপাট করে আজ অর্থনীতিকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অসংখ্য সহযোদ্ধাকে গুম ও হত্যা করেছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার ‘গায়েবি মামলা’ দিচ্ছে।

সরকার ও পুলিশ-প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ‘মিথ্যা মামলার’ জন্য ভবিষ্যতে জবাবদিহি করতে হবে। সব ঘটনার তদন্ত হবে। তখন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই সরকারকে বিএনপির ভয়ে ধরেছে। তারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আতঙ্কে ভুগছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি জনসভায় বক্তব্য রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনসহ সাত দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে ফখরুল বলেন, এসব দাবি আদায়ে আগামী ৩ অক্টোবর জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ৪ অক্টোবর মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এভাবে দাবি আদায়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

প্রধান বক্তা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘অবৈধ সরকার’ রাষ্ট্রের তিনটি ‘স্তম্ভ’ (আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগ) ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকার ফ্যাসিস্ট সরকার। দুর্নীতি আর লুটপাট করে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে দিয়েছে।

খালেদা জিয়ার আহ্বানে বিভিন্ন দলমত আজ ঐক্যবদ্ধ মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।

সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, জনগণের দাবি মেনে নিন। পদত্যাগ করুন। সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

তিনি পুলিশ-প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগের চাকরি করেন না। এ দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় আপনারা বেতন পান। এখনো সময় আছে, আপনারা ‘নিরপেক্ষ’ দায়িত্ব পালন করুন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ।

আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুইয়া, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু, এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহ্উদ্দিন আহমদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ