ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আত্মঘাতী, অগণতান্ত্রিক : টিআইবি
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা (২ অক্টোবর ২০১৮) : সংসদের পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানবিরোধী’ আইনে পরিণত করা হয়েছে বলে মনে করছে টিআইবি। দুর্নীতিবিরোধী এই সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই আইনের সব নিবর্তনমূলক ধারা বাতিলের দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে আইনটিকে নতুন করে সাজানোরও দাবি করেছেন। তিনি এই আইনকে আত্মঘাতী ও অগণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্প্রতি সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা ও পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদে উপস্থাপনের যে ঘোষণা এসেছে, তা কিছুটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছে টিআইবি। তবে এর মাধ্যমে সব অংশীজন তথা সাধারণ নাগরিকের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগসহ যে নিরাপত্তাহীনতাবোধ সৃষ্টি করেছে, তার কতটুকু নিরসন হবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
আজ দেওয়া বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের বৈঠক ও মন্ত্রিপরিষদে সম্পাদকদের উদ্বেগের বিষয় উপস্থাপনের ঘোষণা ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ব্যাপক উৎকণ্ঠা ও সুস্পষ্ট পরামর্শ পাশ কাটিয়ে অস্বাভাবিক দ্রুততায় আইনটি সংসদে অনুমোদন দেওয়ার পর আলোচনার মাধ্যমে বিতর্ক নিরসনের ইঙ্গিত আমাদের আরও উদ্বিগ্ন করছে।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইনটিতে এত বেশিসংখ্যক নিবর্তনমূলক, সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধারা রয়েছে যে, কোনো প্রকার আংশিক পরিবর্তন উদ্ভূত নিরাপত্তাহীনতার অবসান ঘটাবে না। মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতাবিরোধী ও আইনের জবাবদিহিহীন অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টিকারী সকল ধারা বাতিল করে আইনটি নতুন করে ঢেলে সাজানো ছাড়া এ পর্যায়ে অন্য কোনো বিকল্প নেই।’
ড. জামান আরও বলেন, ‘আইনটির খসড়ার ওপর দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা তাঁদের উৎকণ্ঠার কথা জানিয়ে সুস্পষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। আমলে নেওয়ার অঙ্গীকার করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি। এই বাস্তবতায় তড়িঘড়ি করে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা বা দাবি মানা হয়েছে, এমন ধারণা সৃষ্টির প্রচেষ্টা করা হলে তা যেমন হতাশাব্যঞ্জক, তেমনি আত্মঘাতী হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে মানুষের বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার হরণের সুযোগ সৃষ্টির প্রয়াসকে আত্মঘাতী ও অগণতান্ত্রিক বিবেচনা করছি। এর থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’