প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যাচ্ছেন না প্রশ্নের ভয়ে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রশ্ন এড়াতে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সফর ‘বাতিল’ করেছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর বিএনপির সমাবেশে বিরোধী দলের নেতারা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে জোরদার আন্দোলনের ঘোষণাও দেন।
এই মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেয়ার কথা থাকলেও তিনি যাচ্ছেন না বলে সোমবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে এই বিষয়ে সরকারের ভাষ্য পাওয়া যায়নি।
প্রকাশিত সংবাদ ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সমাবেশে বলেন, “সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করবেন বলেই তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল করেছেন। কারণ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রশ্নের জবাব তার কাছে নেই।”
আগামী নির্বাচন নিয়ে দুই দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে গত ২৩ অগাস্ট দুই প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করে কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুন। তিনি সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চেয়েছেন।
দুই দলের অনড় অবস্থানে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশও।
সংবিধান অনুযায়ী, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে, যা নিয়ে বিরোধী দলের আপত্তি।
সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার পর থেকেই তা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের শরিকরা।
সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে। না হলে দুর্বার আন্দোলনে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।”
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সমাবেশে রাজধানীর সব ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী মিছিল নিয়ে যোগ দেয়।
আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “তারা সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। এই সরকারের আমলে দুর্নীতির সর্বোচ্চ বিস্তার লাভ করেছে। সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে এক নম্বর হবে।”
পুরনো বিমান আনার কারণে হজযাত্রীদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এটা এই সরকারের সর্বশেষ ব্যর্থতা।”
নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের প্রতিহিংসামূলকভাবে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
“মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে অসম্মান করা যাবে না।”
বিএনপি ক্ষমতায় এলে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। জঙ্গিবাদের উত্থান ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে শুরু হয়েছে।
“তাদের আমলে রমনা বটমুল, যশোরের উদীচীসহ বড় বড় বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। কিন্তু ওই সময়ের সরকার একজন জঙ্গিকে ধরেনি।”
“২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ওই সব জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে বিচারে সোপর্দ করেছে। আগামীতেও আমরা ক্ষমতায় গেলে জঙ্গি নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।”
সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মির্জা আব্বাস, আমানউল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ফজলুল হক মিলন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।