রাজউকের চোখে আঙ্গুল দিয়ে চলছে দেড় শতাধিক দোকান

সাইফুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (রাজউক) এর অনুমতি সনদ না নিয়েই বছরের পর বছর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে সিদ্ধেশ্বরী এলাকার দেড় শতাধিক দোকান।

২৩ মার্চ ২০১৯ (শনিবার) বিকেলে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্সী কামরুজ্জামান কাজলের আয়োজনে, মাদক সমস্যা এবং জনদুর্ভোগ নিরোসনে করনীয় বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয় এর অডিটোরিয়ামে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন অভিযোগে এ তথ্য উঠে আসে।

এসময়ে আলোচনায় অংশ গ্রহন করতে আসা বাসিন্দারা তাদের নিরাপত্তার কথা এবং যত্রতত্র কোচিং সেন্টার গড়ে উঠার কারনে সারাবেলাই মহল্লার রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি পাকিং করে রাখা হয়। একারনেই মহল্লাবাসীর চলাচলে অসহনীয় বাধার সৃষ্টি হয়। এসব থেকে উত্তরনের জন্য কাউন্সিলরকে আলোচনায় অংশ গ্রহনকারীর অনেকেই অভিযোগ করেন।

এ প্রশংঙ্গে কাউন্সিলর কাজল সে সকল বাড়িওয়ালা এবং ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যারা রাজউকের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এটা ঠিক নয়। কারন, যখনই আপনি অনুমোদনের জন্য যাবেন, তখনই আপনার এবং আপনার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য কিছু শর্ত পূরন করতে হবে। সেগুল পূরণ হলেই আপনি ব্যবসা চালানোর অনুমতি সনদ পাবেন। কিন্তু এই পথে না যেয়ে নিয়ন-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছা মত প্রতিষ্ঠান করে যাচ্ছেন৷

যার ফলে যেকোন সময় দূর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। আমি আপনাদের পূর্বের ন্যায় আবারো অনুরোধ করছি, আপনারা আইনানুগ ভাবে কাজ করেন। কারন রাজউক যদি অভিযান চালিয়ে সব গুড়িয়ে দেয়,আমার কিছুই করার থাকবে না।

এসময়ে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপনে বাড়ির সীমানা প্রাচীর এবং রাস্তায় জ্যামের সৃষ্টির কারন উল্লেখ করে বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউন্সিলর বলেন, সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা এখনো কোচিং সেন্টার বানিজ্য করছেন সেই শিক্ষক এবং বাড়ির মালিকদের শুধরানোর জন্য ২সপ্তাহ সময় দিলাম।

এপ্রশংঙ্গে মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল আরো বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে প্রায়ই নোটিস করে জানান রাজধানীর সবচেয়ে বেশী কোচিং বানিজ্য হয় আমার নির্বাচনী এলাকায়। তাই সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমাকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়৷

তাছাড়া উপস্থিত স্থানীয় মুরুব্বিরা সিদ্ধেশ্বরী বালক স্কুলের মাঠ দখল মুক্ত করা সহ মাদকের আখড়াগুলোকে সফলভাবে উচ্ছেদ করার জন্য প্রশাসন এবং কাউন্সিলর কে ধন্যবাদ জানিয়ে, মাঠটিকে রমনা পার্কের ন্যায় (walk way) ওয়াক ওয়ে তৈরি ও একটি সবুজ বলয় প্রস্তুতের আহব্বান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর এর কাছে আরো অভিযোগ ছিল, পানি জমে থাকা, লাইটপোস্টের অকার্যকারিতা এবং কিছু স্থানে মশার উপদ্রব নিয়ে।

উপরোক্ত পানি জমে থাকা অভিযোগের প্রসংঙ্গে কামরুজ্জামান কাজল জানান, আমরা আমার ওয়ার্ডের তিনটি স্থান ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করে প্রকল্পের আওতাভূক্ত করা হয়েছে। অচিরেই এই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

লাইটপোস্টের অকার্যকারিতা নিয়ে এলাকাবাসী সাথে একই অভিযোগ করে রমনা মডেল থানার ওসি অপারেশন মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, যেই স্থানে লাইট জ্বলছে না, ঠিক ওখানেই মাদকসেবীদের আনোগোনা লক্ষনীয়। কারন, আমাদের টিমগুলতো সাধারণত অন্ধকারের কারনে সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারে না, সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় ঐ চক্র।

এবিষয়ে কাজল বলেন, আমারা এখন এলইডি যুগে প্রবেশ করেছি। এই প্রযুক্তির সাথে আমাদের পরিচয় নতুন বলে, সিটি করপোরেশন এর কর্মীরা তাতক্ষনিক সমাধান দিয়ে অপারগ। এবং এই সিস্টেমটাও নিয়ন্ত্রণ হয় অন্য একটি জায়গা থেকে। যে কারণে আমাদের একটু বেগ পেতে হচ্ছে কিন্তু এ সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে বলে জানান।

একইসাথে মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের বেশীভাগ সময়ই সরকারি বাংলোগুলোতে ব্যস্ত থাকায় নিয়মিত ঔষধ প্রয়োগে একটু বিলম্ব হয় বলেও জানান কাউন্সিলর কাজল।

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত থেকে বক্তব্য করেন যথাক্রমে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর এ কে এম কামরুল ইসলাম। রমনা মডেল থানার ওসি অপারেশন মোঃ মাহফুজুর রহমান, সিদ্ধেশ্বরী ফাড়ি ইনচার্জ জুলফিকার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাচ্চু সহ দক্ষিন সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারী।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ