শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ স্বজনরা
মনির হোসেন মিন্টু, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২ আগস্ট) : ঢাকা শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে লম্বা সারি। শিশুদের প্রায় সবাই জ্বরে আক্রান্ত। কোনো শিশু জ্বরে কাতরাচ্ছে। কেউ কাঁদছে। অসুস্থ শিশুদের নিয়ে জরুরি বিভাগের সামনে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও চিকিৎসকদের দেখা না পেয়ে অভিভাবকরা অস্থির হয়ে পড়ছেন। অনেকেই করছেন হট্টগোল।
২ আগস্ট (শুক্রবার) সকালে ঢাকা শিশু হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে এ চিত্র দেখা যায়।
অবস্থার প্রেক্ষিতে সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বেগ পেতে হচ্ছে। কখনও কখনও অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করছেন আনসার সদস্যরা।
অভিভাবকরা বলছেন, শুক্রবার হওয়ায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসকের সংখ্যা কম। অনেক হাসপাতালে চিকিৎসক না পেয়ে তারা শিশু হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু শিশু হাসপাতালে জরুরি বিভাগ ছাড়া চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। যেখানে শিশু হাসপাতালে আরও জরুরি বিভাগ খোলা দরকার ছিল সেখানে মাত্র একটি খোলা রয়েছে। সেখানে মাত্র দুই থেকে তিনজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসক দেখাতে পারছেন না তারা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় চিকিৎসকদের আসতে বলা হয়েছে।
বাড্ডা থেকে এক বছর ১০ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন হেলাল মোরশেদ। তিনি বলেন, ‘ভোর ৫টায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে যেয়ে দেখি চিকিৎসক নাই। পরে সকাল ৮টায় ঢাকা শিশু হাসপাতালে আসি। ৮টা থেকে এখন পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে রইছি, কিন্তু ডাক্তার দেখাতে পারিনি। ইমার্জেন্সিতে যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে যাবো কোথায়?’
সাড়ে চার বছরের সাব্বিরকে নিয়ে সাভার থেকে এসেছেন মিনু। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে সাব্বিরের জ্বর ও বমি। সকাল থেকে লাইনে এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছি। ইমার্জেন্সিতে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়?’
এ বিষয়ে অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ কে এম জাহাঙ্গীর কবীর এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, ‘১ আগস্ট রোগীর সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু আজ ২ আগস্ট (শুক্রবার) সকালে হঠাৎ করেই রোগী বেড়ে গেছে। আমরা এখন চিকিৎসকদের ডেকেছি, তারা আসছেন। আমাদের পরিচালক স্যারও আসছেন। আমাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এটা মোকাবিলা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা সাড়ে ছয়শ রোগীর চিকিৎসা দেয়া। সাড়ে ছয়শ রোগীর চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে। তবে এটা খুব কম। এ মুহূর্তে কমপক্ষে এক হাজার শয্যা দরকার।’
জাহাঙ্গীর কবীর আরও জানান, এ মুহূর্তে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু আছে ১২৮। শয্যা কম থাকায় গুরুতর ডেঙ্গু রোগী ছাড়া ভর্তি নেয়া হচ্ছে না। ডেঙ্গু পরীক্ষায় ব্যবহৃত কীটের সমস্যা নেই বলেও জানান তিনি।