দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতে উৎপল ওএসডি
সাইফুর রহমান:
দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে বাঁচাতে গণগূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে’কে ওএসডি (রিজার্ভ) করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে র্যাব সদর দপ্তরে কাজে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনে গতকাল ২৪ সেপ্টেম্বর ওএসডি করে গৃহায়ন ও গণর্পূত মন্ত্রনালয়। অথচ তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে মন্ত্রনালয় সেই সময় উৎপল কুমার দে দায়িত্বে ছিলেন না।
র্যাব সদর দপ্তরের কাজের টেন্ডার আহবানের সময় দায়িত্বে ছিলেন গণর্পূত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মঈনুল ইমলাম। তিনি অধিদপ্তরটির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেনের ঘনিষ্টজন বলে পরিচিত। তাকে কৌশলে গণর্পূত ঢাকা সার্কেল-১ এ দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মোঃ সাহাদাত হোসেন এই ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অধিদপ্তরটির কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোঃ সাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথেও তার সখ্যতা বেশি আছে।
তারই ধারাবাহিকতায় তার অবৈধ কাজের কথা শুনার জন্য ড. মঈনুল ইসলামকে ঢাকার দায়িত্ব দেয়ার জন্য উৎপল কুমার দে’কে সরিয়ে দেয়া ও তার ইমেজ নষ্ট করতে কৌশল হিসেবে কাজ করছে বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেন। উৎপল কুমার দে দক্ষ, যোগ্য ও পরিশ্রমী একজন কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে ওএসডি করা হল।
বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে ঠিকাদার জি কে শামীমের দেওয়া ঘুষ কেলেঙ্কারীর অভিযোগে নিউজ হয়েছে। সে বহাল তবিয়তে আছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না মন্ত্রনালয়। এই বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাহাদাত হোসেনের মন্তব্য নিতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
খোঁজ নিয়ে ও কাগজপত্রে দেখা গেছে, র্যাব সদর দপ্তরের কাজের টেন্ডার আহবান করা হয় গত বছরের ৫ জুন। এই সময়ের টেন্ডার নিস্পত্তির চেয়ারম্যান ছিলেন গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রকল্প ও বিশেষ প্রকল্পের (পিএনএসপি) বর্তমান কর্মকর্তা ড. মঈনুল ইসলাম। প্রচলিত বিধিমোতাবেক প্রকল্পের দরপত্র গণপূর্ত ঢাকা সার্কেল-৩ থেকে আহবান ও তৎকালীন ঢাকা গণপূর্ত জোন থেকে দরপত্র মূল্যায়ন দেওয়া কথা।
র্যাব সদর দপ্তরের কাজের টেন্ডার গণপূর্ত ঢাকা সার্কেল-৩ এর অধিনে। কিন্তু নিয়মনীতি না মেনে বর্তমানে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োজিত ড মইনুল ইসলাম তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে যোগসাজসে অতিরিক্ত কমিশন আদায়ের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর (সদর দপ্তর) থেকে আহবান করেন। এই অথচ উৎপল কুমার দে ঢাকা গণপূর্ত মেট্রোপলিটন জোনের দায়িত্ব পেয়েছেন গত বছরের ২৬ আগষ্ট।
জি কে শামীমের মালিকানাধীন জি কে বিল্ডার্সের কাজের ৯৯ ভাগ কাজ তার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন। এই ঘটনায় ঢাকা গণপূর্ত মেট্রোপলিটন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে’কে অনৈতিকভাবে জড়িত করা হয়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
এই বিষয়ে উৎপল কুমার দে এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে আমি এই ঘটনার সাথের সাথে জড়িত না। আমার সামাজিক ইমেজ নষ্ট করতে ও মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে ওএসডি করা হয়েছে। বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত করলে এর সত্যতা মিলবে। আমি মাননীয় মন্ত্রীর উপর আস্থা রাখি, তিনি তদন্ত করে অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দিবেন।