বিচার না পাওয়া যুবলীগ নেতা জুয়েলের আক্ষেপ
ঢাকা: সিনিয়র নেতাদের সামনে খোদ দলের সেন্ট্রাল অফিসে বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হলেও এ প্রর্যন্ত কোন বিচার পাননি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান জুয়েল।
নেতাদের কাছে বিচারের কোন আশ্বাস না পেয়ে পল্টন থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ বলেছে, তাদের কিছু করার নেই। নিজ দলের কর্মীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে জুয়েল এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত রোববার ভোরে চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর যুগলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ওইদিন সম্রাটের গ্রেফতারের খবর ছড়িলে পড়লে বিকেলে যুবলীগের সেন্ট্রাল অফিসে আসতে শুরু করেন সিনিয়র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
এসময় যুবলীগ অফিসে যান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান জুয়েল। ওইসময় যুবলীগ নেতা নামধারী সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার সময় যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান, ফারুক হোসেন ওরফে বোমা ফারুক,মাহবুবুর রহমান হিরন ও বেলাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
জুয়েলকে তাদের সামনে বেধড়ক মারপিট করলেও তারা কোন প্রতিবাদ বা বাধা দেয়নি। পরে জুয়েল গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে আসেন।
জুয়েল পল্টন থানার অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পল্টন থানার বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, জুয়েল থানায় যাওয়ার আগেই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহি এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে থানা পুলিশকে মামলা না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
রোববার সন্ধ্যায় জুয়েলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার জুয়েল হাসপাতাল থেকে মুক্ত হন। গতকাল মঙ্গলবার জুয়েলের শরীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি আবোরো একটি বেসরকারি হাসপালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, নেতাদের সামনে বহিরাগতদের হাতে মার খেলেও প্রতিবাদ বা বিচার দুরে থাক কেউ তার খোঁজ নেননি। তার আক্ষেপ, সবসময় রাজপথে থেকেছি ভবিষ্যতেও থাকতে চাই কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বহিরাগতদের হাতে মার খেয়ে বিচার পাবো না তা মানতে কষ্ট হচ্ছে। জুয়েলের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশানে। তিনি ১৯৯৪ সালে ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্র জীবন শেষে তিনি যুবলীগে যোগ দেন।
জানা গেছে, যুবলীগ নেতা নামধারী সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টুর দলীয় কোন পদ পদবি বর্তমানে নেই। তিনি চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে আটক জিকে শামীমের অন্যতম সহযোগী। বর্তমানে জিকে শামীমের ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন মিন্টু।
জি কে শামিমের সঙ্গে যুবলীগের এ নেতা
তবে, এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মিন্টুর ০১৭৩০-৯১৫৮৭৯ নং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান বলেন, ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এমনটায় দাবি করেন যুবলীগের এই নেতা। পরে তিনি ঘটনাটি শুনেছেন এবং এই ঘটনার তীব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আতাউর রহমান আরো বলেন, এই ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে তাদের সাংগঠনিক ভাবে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।
জুয়েলের মামলা কেন নেওয়া হলো না এই বিষয়ে জানতে চাইলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এই বিষয়ে পরে কথা বলবো আমি এখন একটি মিটিং এ আছি।