জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, নবীনগর, সাভার, ঢাকা (১৬ ডিসেম্বর ২০১৯) : মহান বিজয় দিবসের ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামে জনতার। শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়ে শহীদদের উদ্দেশে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করছে লাখো মানুষ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠের ভাষণ আর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জাগরণী গানে মুখর পাড়া-মহল্লা, গলি থেকে রাজপথ।
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। আজ বাঙালির গৌরবের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রকাশের দিন আজ। ৪৮ বছর আগে এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বাঙালির সামনে। সেদিন তারা স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে। আর বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল বাঙালির।
এবারের বিজয় দিবস এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং এর পরের বছর ২০২১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে বাংলাদেশ।
বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা-ই নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়।