করোনা আক্রান্ত স্বামীর পাশে সারাক্ষণ থাকা স্ত্রীর করোনা নেগেটিভ!
জেলা প্রতিবেদক (বগুড়া), এবিসিনিউজবিডি (৭ এপ্রিল ২০২০) : করোনাভাইরাস পজেটিভ নিয়ে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি রংপুরের সেই শ্রমজীবী ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পরেও তার স্ত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। ওই ব্যক্তির সঙ্গে হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছিলেন তার স্ত্রী। সেখানে কোনো সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই স্বামীর সেবা করেছেন তিনি।
এরপরও পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসার ঘটনাটিকে মিরাকল বলে অভিহিত করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বগুড়ার একমাত্র আক্রান্ত ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শে তার স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে গত রোববার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সোমবার রাতে নমুনার রেজাল্ট পাওয়া যায়।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, করোনা রোগীর সংস্পর্শে থাকা তার স্ত্রীর শরীরে করোনার কোনো উপস্থিতি মেলেনি। এটা মিরাকল বলা চলে। কারণ ওই নারী এক সপ্তাহ ধরে স্বামীর পাশে থেকে সেবা করেছেন।
আর হাসপাতালে রোগীর সংস্পর্শে আসা আরও একজন তার মেয়ে জামাইকে রংপুরের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রাখায় তার নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, রংপুরের সেই শ্রমজীবী ব্যক্তির করোনা পজেটিভ হলেও শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
করোনার সংক্রমণ শুরু হলে গত ২৯ মার্চ রাতে একটি ট্রাকে চড়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ট্রাকে আরও ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ ছিলেন। পথে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এমন আতঙ্কে ওই ব্যক্তিকে ভোররাতে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়া হয়।
দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার পর পুলিশের সহযোগিতায় একটি রিকশাভ্যানে তাকে প্রথমে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুদিন রাখা হয়। পরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।
নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। বগুড়ায় তিনিই একমাত্র করোনা পজেটিভ রোগী। ওই রোগীর শরীরে করোনা পজেটিভ আসার পর চিকিৎসার প্রয়োজনে সংস্পর্শে আসা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধানসহ ৫ চিকিৎসক ও ৮ নার্স এবং অন্যান্য মিলে মোট ১৬ জনকে গত শুক্রবার থেকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।