তিস্তা চুক্তি কবে হবে!

Dipu Moni Tista contract দিপু মনি তিস্তা চুক্তিরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সরকারের মেয়াদের শেষ সময় এসে পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি জাতীয় সংসদে জানালেন, তিস্তা চুক্তি কবে হবে- সে বিষয়ে কোনো সময় বলা সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার চলতি জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনের প্রথম দিনের প্রশ্নোত্তরে দীপু মনি তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, “ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতার কারণে চুক্তিটি এখনো সম্পাদন করা যায়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক একটি বিষয় বিধায় চুক্তিটি সম্পাদনের কোনো সময়সীমা প্রদান করা সম্ভবপর নয়।”

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ শাম্মী আখতারের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে ‘অত্যন্ত আন্তরিক এবং তৎপর’।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বহু আলোচিত এ চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

চুক্তিটি না হওয়ায় বাংলাদেশের হতাশার কথা দিল্লিকে বেশ স্পষ্টই জানয়ে দেয়া হয় সে সময়। হতাশা প্রকাশ করেন মনমোহন সিংও।

মমতাকে রাজি করাতে এরপর দিল্লির পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হয়। দীপু মনি নিজেও কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তিস্তা চুক্তি হলে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে দাবি করে অনড় থাকেন মমতা।

দীপু মনি সংসদকে জানান, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রেক্ষিতে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতিও নেয়া হয়।

“কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতার কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে চুক্তিটি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি।”

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ খাদিজা খাতুন শেফালীর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের কতোজন নাগরিক (রোহিঙ্গা) অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাস করছে তার কোনো পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই।

“কক্সবাজারের কুতুপালং ও নোয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পে তালিকাভুক্ত শরণার্থীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৯০২ জন এবং এদের সঙ্গে বসবাসরত তালিকা বহির্ভূত শরণার্থীর সংখ্যা চার হাজারের বেশি। এদের ‘সংযুক্তি সদস্য’ বলা হয়। বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের অন্য নাগরিকরা শরণার্থী হিসাবে নিবদ্ধিত নন। তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। তাদের সঠিক কোনো সংখ্যাগত পরিসংখ্যান নাই।”

শরণার্থীদের পাশাপাশি ‘অনিবন্ধিত অনুপ্রবেশকারীদের’ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সরকার জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বলে মহিলা সাংসদ অপু উকিলের প্রশ্নের জবাবে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ রাশেদা বেগমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিএসপি বাতিল হওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে- বিষয়টি তেমন নয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির মাত্র দশমিক ছয় শতাংশ শুল্কমুক্ত এ সুবিধা পেত। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক এ সুবিধার আওতায় ছিল না।

নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তি গত ২৮ জানুয়ারি সই হয়েছে। ভারত ইতোমধ্যে চুক্তিতে অনুস্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশে অনুসমর্থনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ