ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে কঠোর অবস্থানে সরকার
আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১১ এপ্রিল ২০২০) : করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ঘরে থেকে কর্মহীন হয়ে যওয়া অসহায় মানুষদের জন্য বরাদ্ধ দেয়া ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে কঠোর অবস্থানে সরকার। অনিয়মেরন প্রমান মিললে ছাড় পাবেন না কোন জনপ্রতিনিধি। ‘কাউন্সিলর’ অথবা ‘চেয়ারম্যান’ পদ হারানোর পাশাপাশি ফৌজদারী মামলারও আসামি হবেন।
শনিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। অনিয়মের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, করোনায় বেকার হয়ে পড়া অসহায় মানুষদের ত্রাণ চুরির বিষয়টি আমি সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং দুঃখজনক। একজন জনপ্রতিনিধি যিনি নির্বাচত হয়েছেন স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতা এবং তাদের সুখ-দুঃখ দেখভালের জন্য। সেই তিনি কি করে অসহায় মানুষের ত্রাণ চুরি করেন?
তাজুল ইসলাম ত্রাণ চুরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশণার কথা জানিয়ে বলেন, কোন জনপ্রতিনিধি, তিনি হন কাউন্সিলর অথবা চেয়ারম্যান ছাড় পাবেন না। শুধু পদই হারাবেন না, ফৌজদারী মামলারও মুখোমুখি হতে হবে। মন্ত্রী এ বিষয়ে আজ (শনিবার) সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ (জিও) জারি করা হয়েছে বলেও জানান।।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনা ভাইরাস জনিত প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সকলে একযোগে কাজ করছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি।’
এ দিকে আজ স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে জারিকৃত অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের কারণে শহর ও গ্রামে বিপুল সংখ্যক মানুষের আয়-রোজগারের পথ বদ্ধ হয়ে পড়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সকল ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজস্ব অর্থায়নে ত্রাণ কার্যক্রম যেমন-চাল, নগদ অর্থ, শিশু খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করছে। প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা/অনুশাসনের আলোকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জনপ্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ তৃণমূল পর্যায়ে ত্রাণ সামগগ্রী বিতরণ কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় যে, কোথাও কোথাও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম/দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।
এরুপ অনিয়ম/দুর্নীতিতে জড়িত জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে সাময়িক বরখাস্তকরণ, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা রুজুসহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণকে অনিয়ম/দুর্নীতির বিষয়ে সুনিদিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ প্রতিবেদন তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করা হলো।