ইউনূস প্রসঙ্গে উদ্বেগের কিছু নেই
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে সরকার ‘সব কিছু’ আইন মেনেই করছে জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।
নোবেল বিজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কর ফাঁকির মামলার খবরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশের এক দিন পর পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এ প্রতিক্রিয়া এলো।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, “এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু আমি দেখছি না। সরকার দেশের আইনের বাইরে কিছু করছে না, ভবিষ্যতেও করবে না।”
গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালে ইউনূসের নিয়ম ভেঙে আয়কর অব্যাহতি নেয়া, বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিধি লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে ইউনূসের পক্ষ থেকে বলা হয়, অনিয়মের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে বলেন, বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষ, বিশেষ করে নারীদের জীবনমানের উন্নয়নে ইউনূসের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য তাকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
“মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বাংলাদেশের আইন ও প্রক্রিয়া যথাযথ ও স্বচ্ছভাবে অনুসরণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।”
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রশাসনিক কাঠামোকে ‘অনন্য’ অভিহিত করে তার ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান মুখপাত্র।
তিনি বলেন, “আমরা একজন যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং একজন নতুন চেয়ারম্যানের অপেক্ষায় আছি, যারা হবেন ব্যাংকের সাফল্য ধরে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণকে একটি অর্থনৈতিক মডেল হিসেবে দাঁড় করানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে তাদের জীবনমানের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।
মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অব্যাহতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে গেলেও উচ্চ আদালতের রায় ইউনূসের বিপক্ষে যায়।
ইউনূসের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার চাপ থাকলেও সরকার বরাবরই তাকে গ্রামীণ ব্যাংকে না ফেরানোর সিদ্ধান্তে অটল থাকে। ব্যাংকের জন্য একজন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগে ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রস্তাবও সরকার খারিজ করে দেয়।
গত বছর দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, তার সরকার ইউনূসকে নিয়ে ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে।
হিলারি সে সময় আশা প্রকাশ করেন, সরকার এমন কিছু করবে না, যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়।