সংবিধান সংশোধন ছাড়া নির্বাচন হতে দেব নাঃ ফখরুল

Mirza Fokhrul Fakhrul Islam মির্জা ফখরুল ইসলামরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল না করা হলে নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে বিএনপি।

সংবিধান অনুসারে ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্পিকারের ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় এই হুমকি দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বর্তমান সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।”

নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।

বর্তমান সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে বিলুপ্ত হয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি। এখন সংসদ বহাল রেখে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ই আগামী নির্বাচন হবে।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না দাবি করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালে আন্দোলন করছে বিএনপি। তবে তাদের দাবির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি।

দুই প্রধান দলের বিপরীত অবস্থানের মধ্যে বৃহস্পতিবার সংসদের শেষ অধিবেশনের সূচনা বক্তব্যে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংবিধান অনুসারে আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে।

বিএনপি সংবিধান সংশোধনের দাবি জানালেও সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়নি। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিএনপিকে যে কোনো প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপনের কথা বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সরকারি দলের নেতারা এটাও বলছেন, সংবিধানে পরিবর্তন হবে না।

ফখরুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বার বার সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন। মানুষের প্রয়োজনে এই সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। এটা ধর্মগ্রন্থ কোরআন কিংবা বাইবেল নয় যে এতে পরিবর্তন আনা যাবে না।”

বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজনে ‘তারেক রহমানের রাজনৈতিক চিন্তা প্রসূত আগামীর বাংলাদেশ ও তৃণমূলের ভাবনা’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফখরুল।

তিনি বলেন, “তারেক রহমান কেবল আমাদের নেতাই নন, বাংলাদেশে আগামী দিনের স্বাপ্নিক। নির্বাসিত জীবনে থেকেও দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন নিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

“তারেক রহমান দেশের রাজনৈতিক নীতির সংস্কৃতির পরিবর্তন চান। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যখন প্রথম দেশে এসেছিলেন, তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তার জবাবে জয় কুৎসা রটানা করেছেন।”

রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশে বাধা, গণমাধ্যম ‘নিয়ন্ত্রণে’ নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ, মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করেন ফখরুল।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “এখনো দলের ভেতরে-বাইরে একটি মহল সরকারের সঙ্গে এক হয়ে বিএনপিকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে।”

ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূল নেতাদের বলব, আবার যদি দলের কেউ বেঈমানী করে, তাহলে আমরা হয়ত জেলে যাব। কিন্তু আপনারা তাদের ছাড়বেন না।”

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন কবি আল মাহমুদ, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খোন্দকার মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক আবু আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত এস এম রাশেদ আহমেদ চৌধুরী ও জাতিসংঘ সিডো কমিটির সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব গাজী আবদুল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে আসা তৃণমূল নেতারাও বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ