বরগুনার চিকিৎসক কামরুল আজাদকে স্যালুট
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (৭ মে ২০২০) : গত ফ্রেব্রুয়ারিতে চীনের উহানফেরত এক শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে যান বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু করোনাসম্পর্কিত কোনো প্রশিক্ষণ না থাকায় তখন সেখানে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে ভয় পাননি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কামরুল আজাদ। তিনি ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেন। এরপর তাকে হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। এভাবেই বরিশাল বিভাগে প্রথম আইসোলেশন ওয়ার্ডের যাত্র শুরু হয়।
একপর্যায়ে বরগুনা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে গড়ে তোলা হয় ৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড। এর দায়িত্ব দেওয়া হয় চিকিৎসক কামরুল আজাদকে। তার নেতৃত্বে ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা দল চিকিৎসা দিয়ে সব করোনা রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়েছে। এটি বরিশাল বিভাগের প্রথম কোনো হাসপাতাল, যেখান থেকে সব করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনা ওয়ার্ডের সাহসী চিকিৎসক কামরুল আজাদ ও টেকনোলজিস্ট বিভূতিভূষণ হালদারসহ এখানের স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিক চেষ্টার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মে পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা ১৪৬ জনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৭৫ জনকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) পাঠানো হয়। হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় ৭১ জনকে। তাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলেন ১১ জন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে আসা উহানফেরত ওই শিক্ষার্থীকে ৭ দিন আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর পরীক্ষায় জানা যায়, তিনি করোনা নেগেটিভ। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রেখে তাকে সেবা দেন চিকিৎসক কামরুল। এরপর কামরুল আজাদের আগ্রহে ১৩ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে অনানুষ্ঠানিকভাবে করোনা ওয়ার্ড চালু হয়। পরে ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ার্ডটি উদ্বোধন করা হয়।
সূত্র জানায়, ২৪ এপ্রিল দুজন করোনা রোগীকে সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর ২৬ এপ্রিল দুজন, ২৮ এপ্রিল একজন, ২৯ এপ্রিল চারজন, ১ মে একজন এবং সর্বশেষ ৪ মে এক রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠায় করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবা দল। দৃষ্টান্ত স্থাপন করা চিকিৎসক কামরুল আজাদকে স্যালুট জানাই।