সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রের পরিপূর্ণ চর্চা
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ‘পুরোপুরি’ প্রত্যাবর্তনের অংশ হিসেবে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই চর্চা শুরুর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে করতে বিরোধী দলের দাবির মধ্যে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের এমপি রুশনারা আলী ও শাবানা মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি একথা বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব এম নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না দাবি করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতির দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল।
আন্দোলনরত বিরোধী দলকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বরাবরই যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি দেখার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
গণভবনে বৈঠকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দুই এমপিকে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার ধরনের গণতন্ত্র চর্চা করি।
“আমরা ফুললি ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিসে ফিরে যাচ্ছি। কোথাও না কোথাও থেকে তো শুরু করতে হবে।”
তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কমিটি করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নিয়ে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে।”
এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের কথাও ব্রিটিশ এমপিদের জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর পর একমাত্র ২০০১ সালেই আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলে যে অভিযোগ বিরোধী দল করছে, তার জবাবে গত সাড়ে চার বছরে অনুষ্ঠিত সাড়ে পাঁচ হাজার নির্বাচনের তথ্য ব্রিটিশ এমপিদের জানান প্রধানমন্ত্রী।
“জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।”
ছবিসহ ভোটার তালিকা হওয়ায় এখন কারচুপির কোনো সুযোগ নেই বলেও বিদেশিদের আশ্বস্ত করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের হাউস অফ কমন্সের বাংলাদেশ বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দলের হয়ে পোশাক কারখানা পরিদর্শনে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা। তার সঙ্গে এসেছেন লেবার পার্টির আরেক এমপি শাবানা।
দুই ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পোশাক খাতের সার্বিক উন্নয়নে ক্রেতাদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বলে উপ প্রেসসচিব নজরুল জানান।
তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি।
বৈঠকে সাভারের রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির বিষয়টিও ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসনে সরকার সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। এছাড়া নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে দেয়া হচ্ছে।
তাজরিন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক এবং রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ নিয়ে যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ রয়েছে।
ওই উদ্বেগ থেকেই সরেজমিন পরিস্থিতি দেখতে যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের এই সদস্যরা ঢাকায় এসেছেন।