দিল্লিতে চার ধর্ষকের ফাঁসি
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ভারতঃ দিল্লির চলন্ত বাসে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ধর্ষণের ঘটনার প্রায় নয় মাস পর ভারতের দ্রুত বিচার আদালত শুক্রবার এই সাজার রায় ঘোষণা করে।
জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক যোগেশ খান্না এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “এই মামলা একেবারেই ব্যাতিক্রমী। আসামীরা ওই ছাত্রীর ওপর একেবারে শেষ পর্যন্ত নির্যাতন চালায়। সর্বোচ্চ সাজা তাদের প্রাপ্য।”
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর এই আদালত আসামি বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত ও মুকেশ সিংকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।
শুক্রবার মৃত্যুদেণ্ডের ঘোষণার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আসামি বিনয়।
নির্যাতনের পর নিহত সেই ছাত্রীর বাবা রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, “সুবিচার পেয়েছি। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।”
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এপি সিংকে রায়ের পর নাটকীয়ভাবে চোখ মুছতে দেখা যায়। তার দাবি, জনগণ ও রাজনৈতিক চাপেই আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছে।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে ফেরার সময় চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছর বয়সী ফিজিওথেরাপির ওই ছাত্রী। ছয় পাষণ্ড ধর্ষণের আগে ছাত্রীর বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পরে তাদের দুজনকেই চলন্ত বাস থেকে ফেলা দেয়া হয়।
এর দুই সপ্তাহ পর মারাত্মক আহত ওই ছাত্রী সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ওই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা।
এই বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে নারীর সুরক্ষা নিয়ে জাতীয় পর্যায়েও বিতর্ক তৈরি হয়। প্রবল বিতর্কের মুখে আইন সংশোধন করে নারী নির্যাতনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা হয়।
মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে মারা যান। মারা যাওয়ার পর তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এছাড়া গত মাসে অপ্রাপ্তবয়স্ক আরেক অভিযুক্তকে তিন বছর সংশোধনাগারে রাখার নির্দেশ দেয় ভারতের কিশোর আদালত।