আজ জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী

বিশেষ প্রতিবেদক, নিউজগ্লোবালবিডি, ঢাকা (৩০ মে ২০২০) : বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ইতিহাসের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মোটাদাগে বড় অভিযোগ দুইটি। স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতির সুযোগ দেওয়া এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করা। এসব অভিযোগ ও সমালোচনা থাকার পরও দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এক শাসক তিনি। বিএনপিও অন্যতম প্রধান দল। দলটির তেমন সাংগঠনিক দক্ষতা ও শক্তি বর্তমানে নেই। কিন্তু নানা জুলুম, নির্যাতন ও চাপের মুখেও দলটি এখনো টিকে আছে। জনসাধারণের বড় একটি অংশই দলটিকে সমর্থন করে।

রাজনীতির এক জটিল ও চরম অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতার দৃশ্যপটে চলে আসেন। তখন একটি বড় প্রশ্ন ছিল যে তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন কিনা। ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ঐতিহাসিক গওহর আলী মন্তব্য করেছিলেন, জিয়া সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিলেও শেষ পর্যন্ত কুলিয়ে উঠতে পারবেন না। ওই প্রবন্ধে তিনি বলেছিলেন, সামরিক বাহিনী মূলত চার ভাগে বিভক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী ও রক্ষীবাহিনী থেকে আসা অংশ, জিয়ার অনুসারী, পাকিস্তান প্রত্যাগত অংশ ও জাসদপন্থী দল। সব সামলে জিয়া এক ধরনের স্থিতিশীলতা এনেছিলেন।

এ রকম নানা ধারণা, প্রশ্ন, সমালোচনা, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র সবকিছু সামলে নিয়েই প্রায় পাঁচ বছর দেশ শাসন করেছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের শাসনামলকে দুইভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। প্রথমত, ৭০ দশকের আর দশজন সামরিক শাসকের মতোই তিনি কঠোর ও কৌশলী। প্রথম দিকে প্রতিপক্ষকে কঠোরভাবে দমন করেন। সামরিক বাহিনীর অনেক সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁর সময়। এর পাশাপাশি তিনি কিছু গণমুখী সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করেন যা জনসাধারণকে আকৃষ্ট করেছিল। খাল খনন কর্মসূচি এর অন্যতম। ওই সময় তিনি দেড় হাজারের বেশি খাল খনন ও পুনঃখনন করেছিলেন। যার অর্থনৈতিক সুফল জনসাধারণ পেয়েছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে খাদ্য শস্য রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদিত হয়। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। এ ছাড়া গণশিক্ষা কার্যক্রম, গ্রাম সরকার, গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনী গঠনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তিনি জনসাধারণকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদেরও শরিকানা আছে। তৃণমূলকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন তিনি। তিনি পোশাক রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক পাঠানোরও উদ্যোগ জিয়া সরকারের আমলেই নেওয়া হয়। পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি তার আমলেই শুরু হয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ