জায়েদ খান ছাড়া কি আর কেউ নেই চলচ্চিত্র শিল্পে?

বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২ জুন ২০২০) : করোনাকালীন সময়ে শিল্পীদের আর্থিক সংকট মেটানো, অসহায় এক সহশিল্পীর বাচ্চার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব, কলা-কুশলীদের নানা সমস্যা মেটানোসহ বিএফডিসির মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনকেও সহযাগিতা করতে হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমতির সাধারণ সম্পাদক-নায়ক জায়েদ খানকে। ঈদুল ফিতরের আগে থেকে চলাচ্চত্রের সঙ্গে জড়িত এমন অসচ্ছল অনেকের পাশেই দাড়াতে হয়েছে তাকে। তবে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেনে, চলচ্চিত্র শিল্পের আর কি কেউ নেই, যারা এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাড়াতে পারেন! বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে এগিয়ে আসার মত কি কেউ নেই? যারা এই চলচ্চিত্র শিল্প থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। করেছেন গাড়ি-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তারা আজ কোথায়? কোথায় তারকা শিল্পীরা? সাকিব খানরা কোথায়?

এফডিসির মসজিদের দীর্ঘদিনের ইমাম ও মুয়াজ্জিন জানান, করোনা সংকটের কারণে গত দুই মাস এফডিসির সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সবাই নিরাপদে পরিবারপরিজন নিয়ে ঘরবন্দি ছিলেন। কিন্তু এফডিসির মসজিদে নিয়মিত আজান, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির ও দোয়া করাসহ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। ঈদের দিনটাও সিঁড়ির নিচে শুয়ে কেটেছে। এফডিসির কেউ তাদের খবরও নেয়নি। খোঁজ নিয়ে এমনটাই জানা যায়।

মোহাম্মদ ইসহাক ১৯৬৯ সালে এফডিসির মসজিদে যুক্ত হন। মসজিদ নির্মাণের শুরু থেকেই তিনি এই মসজিদের ইমামতি করে আসছেন। রাজ্জাক, জমিস, মান্না, খলিল, মিজু আহমেদ থেকে শুরু করে দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রয়াত তারকাদের জানাজা তিনিই পড়িয়েছেন।

তার ভাষ্য মতে, নিজে কাঁদামাটি টেনেছি এই মসজিদ নির্মাণের সময়। সেই শুরু থেকে মাস্টার রুলে কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমাদের সরকারিকরণ করা হয়নি। শেষ বয়েসে একটাই চাওয়া মৃত্যুর আগে যেন সরকারি করা হয়! এফডিসির সকল শিল্পীদের জন্য আমরা দোয়া করি। অনেকের জানাজা নামাজ পড়িয়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের খবর রাখে না।

মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ রশিদ ১৯৮০ সাল থেকে এফডিসির মসজিদের মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দেশের এই দুর্যোগময় সময়ে তার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি বলে আক্ষেপ করেন রশিদ।

রশিদ বলেন, ‘যৌবন বয়স থেকে এফডিসির মসজিদে আছি। বাকি জীবনটাও এখানেই কাটাতে চাই। করোনার ভয়ে সবাই চলে গেছেন। আমরা দু-চারজন যাইনি। এখানেই আল্লাবিল্লাহ করেছি। মসজিদের কাজ চলছে বলে পুরোনো মসজিদ ভেঙে নতুন মসজিদের কাজ চলছে। তাই আপাতত সাউন্ড কমপ্লেক্সের সিঁড়ির নিচে আছি। ঈদও কেটেছে এই সিঁড়ির নিচে শুয়ে। ঈদের আগে জায়েদ খান কিছু টাকা দিয়েছিলেন। আর গতকাল আমাদেরকে কাপড়, গেঞ্জি, গামছা কিনে দিয়েছেন তিনি।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ