পদ্মা সেতুর ৪ হাজার ৮০০ মিটার দৃশ্যমান
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১২ অক্টোবর ২০২০) : অবশেষে বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যান। ৩১তম স্প্যান বসানোর ৪ মাস পর এটি বসানো হলো। এর মধ্যে দিয়ে সেতুর ৪৮০০ মিটার দৃশ্যমান হলো।
নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে নির্ধারিত সময়ের একদিন পর রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫নং পিয়ারে স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হয়।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেনে।
এর আগে গতকাল শনিবার (১০ অক্টোবর) স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি থাকলেও নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকা ও তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যানবাহী ক্রেন পিয়ারের কাছে নোঙর করতে পারেনি। ফলে স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়নি।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় স্প্যান বসানোর কাজ শুরু করা হয়। এরপর ক্রেনটিকে নির্ধারিত স্থানে এনে প্রকৌশলীদের মাপযোগ শেষে ধীরে ধীরে ইঞ্চি মেপে নির্ধারিত পিয়ারে ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিংয়ের উপর স্প্যানটি বাসানো হয়। স্প্যানটি বসানোর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগে তিন ঘণ্টার মতো।
স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে পুরো সেতুতে বাকি রইলো আর মাত্র ৯টি স্প্যান বসানোর কাজ। যেগুলো সবগুলোই মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১-২, ২-৩, ৩-৪, ৭-৮, ৮-৯, ৯-১০,১০-১১, ১১-১২, ১২-১৩নং পিয়ারে বসানো হবে। সেতুর জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ১০ জুন পদ্মা সেতুতে সর্বশেষ বসানো হয়েছিল ৩১তম স্প্যান। করোনা আর বন্যা পরিস্থিতির কবলে সেতুর অন্যান্য কাজ চললেও এরপর আর কোনো স্প্যান বসানো হয়নি। সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগেরও বেশি এবং মূল সেতুর প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, আরো তিনটি স্প্যান ‘ওয়ান-এ’, ‘ওয়ান-বি’, ‘ওয়ান-সি’ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পরবর্তী ৪টি স্প্যান পিয়ার ১-২, ২-৩, ৩-৪ নম্বর পিয়ারে বসানো হবে। আর ডিসেম্বরে ৩২তমসহ বাকি ১০টি স্প্যান পিয়ারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩১টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার অংশ।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।