মহানগর আ’লীগের সম্মেলন মার্চেই, বিতর্কিত-বিদ্রোহীরা দক্ষিণে পদ পেতে মরিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক : ত্যাগী নেতাদের সম্পৃক্ত করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের থানা-ওয়ার্ডে’র সম্মেলন চলতি মাসেই সম্পন্ন করতে দলটির হাই কমান্ড থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এমন নির্দেশনার পর থেকেই চলছে মহানগর উত্তর-দক্ষিণের দায়িত্ব-প্রাপ্তদের তৎপরতা। আর বেশ জোরে-শোরেই চলছে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি। তবে ত্যাগী নেতাদের দিয়ে মহানগরের থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিটগুলো ঢেলে সাজানোর কেন্দ্রের নির্দেশনার বিষয়টি জেনেও পদ পেতে এখনো মরিয়া বিতর্কিত, হত্যা মামলার আসামি ও বিদ্রোহীরা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য এ বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেছেন, ‘বিতর্কিত ও বিদ্রোহীদের আর আওয়ামী লীগে স্থান দেয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের তৃণমূল অর্থাৎ থানা-ওয়ার্ড-ইউনিট পর্যায়ে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে ঢলে সাজানোর লক্ষ্যে মার্চ মাসেই সম্মেলন আহবান করতে দলটির হাই কমান্ড থেকে নির্দেশনা দেয় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণের শীর্ষ চার নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ওবায়দুল কাদেরসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা। থানা-ওয়ার্ডের বর্তমান নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বুধবার (১০ মার্চ) এবিসিনিউজবিডি’র এই প্রতিবেদককে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘উত্তর ও দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ডের সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। চলতি মাসেই এ সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমে ইউনিটগুলোর সম্মেলন করা হবে। এরপর থানা ও ওয়ার্ডের।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সময় বেঁধে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচিত কাউন্সিলরদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, ‘কাউন্সিলররা আমাদের বাইরে না। দলের বাইরে তাদের রাখবো সেটাও নয়। তবে তাদের শীর্ষ পদে অর্থাৎ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে না রাখার জন্য নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি) নির্দেশনা আছে। আমরা সেভাবেই কমিটি করার চেষ্টা করছি।’ তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যারা নির্বাচনে দলের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হয়েছিলেন, তারা থানা-ওয়ার্ডের কমিটিতে থাকতে পারবেন না।’
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের তৃণমূল অর্থাৎ থানা-ওয়ার্ড-ইউনিট পর্যায়ে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে ঢলে সাজানোর লক্ষ্যে মার্চ মাসেই সম্মেলন আহবান করতে দলটির হাই কমান্ড থেকে নির্দেশনা দেয় হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণের শীর্ষ চার নেতার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ওবায়দুল কাদেরসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা। থানা-ওয়ার্ডের বর্তমান নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বুধবার (১০ মার্চ) এবিসিনিউজবিডি’র এই প্রতিবেদককে আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘উত্তর ও দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ডের সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। চলতি মাসেই এ সম্মেলন সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমে ইউনিটগুলোর সম্মেলন করা হবে। এরপর থানা ও ওয়ার্ডের।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সময় বেঁধে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচিত কাউন্সিলরদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, ‘কাউন্সিলররা আমাদের বাইরে না। দলের বাইরে তাদের রাখবো সেটাও নয়। তবে তাদের শীর্ষ পদে অর্থাৎ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে না রাখার জন্য নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি) নির্দেশনা আছে। আমরা সেভাবেই কমিটি করার চেষ্টা করছি।’ তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যারা নির্বাচনে দলের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হয়েছিলেন, তারা থানা-ওয়ার্ডের কমিটিতে থাকতে পারবেন না।’
এদিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিটের আসন্ন এই সম্মেলনকে ঘিরে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন বিতর্কিত, হত্যা মামলার আসামি ও বিদ্রোহীরা। পদ পেতে মরিয়া ফ্রিডম পার্টির এক কথিত নেতাও। তদবির করতে ছুটছেন সভাপতির ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়সহ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। কেউ কেউ আবার ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের বাড়ি-বাড়ি।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগরের পল্টন বা মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদ পেতে ব্যাপক তদবির করছেন সোহেল শাহরিয়ার ওরাফে শর্টগান সোহেল ও আলী রেজা খান রানাসহ বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি। সোহেল শাহরিয়ার ওরাফে শর্টগান সোহেল ও তার সহযোগী আলী রেজা খান রানা রাজধানীর শাজাহানপুর এলাকায় ১১ নম্বর ওয়ার্ড (পুরনো ৩৪) ছাত্রলীগ সভাপতি কাওছার হত্যার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। পদ প্রত্যাশী আলী রেজা খান রানা ২০০১ সালে শান্তিনগরের সাদা হত্যা মামলারও অন্যতম আসামি। তারা সবাই ফ্রিডম পার্টির শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাতক জাফর আহমেদ মানিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এমন অনেক নেতাও থানা-ওয়ার্ড কমিটিতে থাকতে দৌড়-ঝাঁপ করছেন বলে জানা গেছে। কদমতলী থানার ৫৯নং ওয়ার্ডে কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য খোরশেদ আলম বাবু মাস্টার ও আওলাদ হোসেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তারা দুজনই কদমতলী থানা’র সভাপতি পদ পেতে মরিয়া। ৫২নং ওয়ার্ডে থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন এবং ৫৩নং ওয়ার্ডে থানার কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান মামুন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা থানা’র সভাপতির পদ পেতো দৌড়-ঝাঁপ করছেন। গত সিটি নির্বাচনে ১২৯ ওয়ার্ডের মধ্যে ৭০টির বেশি ওয়ার্ডে শতাধিক এমন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। যারা সবাই এখন থানা-ওয়ার্ডেও শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, ‘মহানগর দক্ষিণের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিটকে ঢেলে সাজানোর প্রত্যয়ে সম্মেলন হচ্ছে। কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে পদ দিতে সম্মেলন হচ্ছে না। কমিটি হবে সচ্ছ এবং বিতর্কেও উর্ধ্বে থেকে।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রেস রিলিজে আর কমিটি হবে না। কমিটি হবে সম্মেলনের মাধ্যমে। বিতর্কিতদের কমিটিতে না রাখার জন্য আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে। ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিতদের দিয়েই কমিটি করা হবে। বিতর্কিতরা যতই দৌড়ঝাঁপ করুক না কেন, থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে তাদের ঠাঁই হবে না।’
থানা-ওয়ার্ডে কমিটি গঠনে নগরের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, ঝুঁকি নিয়েছেন, সম্মেলনে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতারাও গুরুত্ব পাবেন থানা-ওয়ার্ড কমিটিতে।’
উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অধীনে ২৪টি থানা, ৭৫টি ওয়ার্ড এবং ওয়ার্ডগুলোর অধীনে ৫-১০টি করে ইউনিট রয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরের অধীনে ২০টি থানা, ৬৫টি ওয়ার্ড, একটি ইউনিয়ন রয়েছে। উত্তরের ওয়ার্ডগুলোর অধীনেও বেশ কয়েকটি করে ইউনিট কমিটি রয়েছে। নগর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে এসব কমিটির মেয়াদ নেই। অনেক জায়গায় পূর্ণাঙ্গ কমিটিও নেই। আবার দু-চার জায়গায় একাধিক কমিটিও রয়েছে।