করোনায় গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিকের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২৭ মার্চ ২০২১) : দেশের বিশিষ্ট পরিবহন ব্যবসায়ী, গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল (২৬ মার্চ) রাতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও তিন কন্যাসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবিসিনিউজবিডি’র পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) জিহাদুজ্জামান তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন ব্যবসায়িক কাজে ভারত গিয়েছিলেন। গত রোববার (২১ মার্চ) দেশে ফিরেই তিনি করোনা পরীক্ষা করেন। এতে তার পজেটিভ ধরা পড়ে। এর পরই তিনি স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। দু’দিন আগে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ-সাপোর্টে নেয়া হয়। সেখানেই গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজ সকাল সারে ৯টায় মোহাম্মাদ আলাউদ্দিনের মরদেহ তার দীর্ঘ দিনের গ্রীন লাইন পরিবহনের প্রধান কার্যালয় রাজারবাগ সংলগ্ন মোমেনবাগে নিয়ে আসা হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। গ্রীন লাইনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এখানেই সকাল ১০টায় মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর তার মরদেহ দেশের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক করস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
দেশের বিশিষ্ট এই পরিবহন ব্যবসায়ী, গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক ও সমাজ-সেবক আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবিসিনিউজবিডি’র পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) জিহাদুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক পত্রে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, মোহাম্মাদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুতে দেশের পরিবহন খাতে অপূরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। জিহাদুজ্জামান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে আলহাজ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন দেশের পরিবহন খাতে যুক্ত করেন গ্রীন লাইন পরিবহন। তিনি দুরদর্শী চিন্তা নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন গ্রীন লাইন পরিবহন সংস্থা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হিনো এসি বাস চালানোর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে গ্রীন লাইন। এরপর পর্যায়ক্রমে কক্সবাজার, বেনাপোল, রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট রুটে বাস চলচল শুরু করে। গ্রীন লাইন পরিবহনই বাংলাদেশের সড়কপথে সর্বপ্রথম এসি বাস পরিসেবা চালু করে। এরপর সুইডেন থেকে ২০০৩ সালে ভলভো ও ২০০৫ সালে স্ক্যানিয়ার এসি বাস আমদানী করে গ্রীন লাইন। ২০১৩ সালে যাত্রীদের স্লিপার কোচে পরিসেবা প্রদান শুরু করে। ২০১৪ সালে গ্রীন লাইন ওয়াটারওয়েজ নামে জলপথে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। ২০১৮ সালে গ্রীন লাইন ঢাকা থেকে সিলেট ও কক্সবাজার রুটে জার্মানি থেকে আমদানী করা ম্যান কোম্পানির ডাবল ডেকার বাস চালু করে। আর ২০১৫ সালে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে এমভি গ্রীন লাইন-২ ও এমভি গ্রীন লাইন-৩ নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুইটি জলযান যাত্রী সেবায় যুক্ত করে।