এই শিক্ষা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, গাজীপুরঃ সাংবাদিক পেটানোসহ তিন মামলায় ৫৩ দিন কারাগারে কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়ছেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ গোলাম মাওলা রনি।
কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জেলখানায় যে শিক্ষা পেয়েছি তা আমার ভবিষ্যতের কর্মকাণ্ডে কাজে লাগবে।”
অনুসারীদেরও এ শিক্ষা কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন পটুয়াখালীর এই সাংসদ, যার বিরুদ্ধে এর আগেও সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
অবশ্য সোমবার বেলা ১১টা ১২ মিনিটে তাকে যখন গাজীপুরের কাশিমপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি দেয়া হয়, তখন খুব বেশি নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
স্ত্রী কামরুন্নাহার, ছেলে রিসাত, ছোটভাই শহীদুল হাসান কবীর ও গোলাম জিলানীসহ স্বজনরা কারা ফটকে রনিকে স্বাগত জানান।
কারা তত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর কবির এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “তিন মামলায় জামিনের কাগজপত্র হাতে আসার পর তা যাচাই-বাছাই করে গোলাম মাওলা রনিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।”
কশিমপুর কারাগারে রনি ছিলেন ‘ভিআইপি বন্দিশালা’ সুরমা ভবনের দোতলার একটি কক্ষে। আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস আল মামুন, জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী ও এটিএম আজাহারুল ইসলামও ওই ভবনেই বন্দি রয়েছেন।
কারা ফটকে রনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার নামে তিনটি মামলা রয়েছে, যেগুলো আদালতে বিচাররাধীন। আমার আদালতের প্রতি আস্থা রয়েছে। এ কারণে আমি বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।”
এরপর সংসদের স্টিকার লাগানো কালো রংয়ের একটি জিপে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন গোলাম মাওলা রনি।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের জন্য গত ২০ জুলাই পল্টনে রনির কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ইমতিয়াজ মমিন সনি ও ক্যামেরাম্যান মহসিন মুকুল। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সংসদ সদস্য রনি নিজেই প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর চড়াও হয়ে লাথি মারছেন।
ঘটনার পর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ রনিকে আসামি করে শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এই মামলা করে।
রনি পরদিন বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেও টেলিফোনে হুমকির অভিযোগে ইনডিপেন্ডেন্ট কর্তৃপক্ষ একটি জিডি করার পর ২৫ জুলাই জামিন বাতিল করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় আদালত।
ওই আদেশে গোয়েন্দা পুলিশ সাংসদ রনিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে হাকিম আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠায়।
হাকিম আদালতে জামিন না পেয়ে গত ২৮ জুলাই জজ আদালতের কাছে আবেদন করেন রনি। কিন্তু সেখানেও জামিন না মঞ্জুর হয়।
এরপর রনি হাই কোর্টে গেলে বিচারপতি নিজামুল হক ও বিচারপতি কাশিফা হোসেনের বেঞ্চ গত ১০ সেপ্টেম্বর তিন মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে।
সাংবাদিক পেটানোর মামলাটি ছাড়া বাকি দুটি মামলা করা হয় গত ১১ অগাস্ট, পটুয়াখালী গলাচিপা থানায়। এ দুটি মামলায় চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে এই সাংসদের বিরুদ্ধে।