হরতালে বিদ্যুতকেন্দ্রে আগুন: ক্ষতি ২০০ কোটি টাকা

2013-01-01-15-31-16-50e301443cd4a-fire-01-finalঢাকা: গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে হরতাল সমর্থনকারীরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়ায়  প্রায় দুইশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।
মঙ্গলবার সকালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুদ্দিন জানান, সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিস, আবাসিক ভবন, যানবাহন এমনকি গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য স্তুপ করে রাখা হাজার হাজার কিলোমিটার তার জ্বালিয়ে দেয়। এর ফলে ওই এলাকার ৪৫ হাজার গ্রাহক এখন  বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এবং প্রায় আড়াই হাজার কৃষক সেচের জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। এই ক্ষতি কবে নাগাদ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে, সে ব্যাপারেও তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
তিনি বলেন, “ওই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে সরকারি অর্থায়নের পরিচালিত ১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্প, রাজশাহী-রংপুর বিভাগীয় সম্প্রসারণ প্রকল্প, সরকারি ও জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত পল্লী বিদ্যুত উন্নয়ন প্রকল্প, সমিতির রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প এবং স্থানীয় জনগণের দেয়া অর্থে পরিচালিত ডিপোজিট ওয়ার্ক প্রকল্প মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।”
এ বিষয়ে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, “দেশের ইতিহাসে কোনো বিদ্যুৎ স্থাপনার ওপর এরকম সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা এর প্রথম।” তিনি সব বিদ্যুৎ ও জ্বালানি স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনায় দায়ীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমি মনে করি, যারা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাধারণ গ্রাহক, তাদেরকেই এসব দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
সেলিম মাহমুদ বলেন, “যারা বিদ্যুৎ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন, তাদের ঘরবাড়িতেই তো এখন বিদ্যুৎ নেই। তাদের নিজেদের জমিতেই তো এখন তারা সেচ দিতে পারছেন না। তাহলে তারা কার সম্পদ নষ্ট করলেন?”
বিদ্যুৎ স্থাপনার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ একটি ভবনে কেন হামলা হলো, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সমিতির চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের যেকোনো এলাকার চেয়ে চাপাইনবাবগঞ্জের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো। সেখানে লোডশেডিং হত সবচেয়ে কম। বিদ্যুৎ নিয়ে এ এলাকার মানুষের অভিযোগও সে কারণে কম। সুতরাং বিদ্যুৎ সংকটের অজুহাতে কেউ এখানে হামলা চালায়নি।”
চেয়ারম্যান আরো জানান, এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উদ্যোগে দুটি নিজস্ব তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় মামলা হয়েছে তিনটি।
মামলায় কাদেরকে আসামি করা হয়েছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, “ঘটনাস্থলে উপস্থিত পল্লী বিদুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারিরা যাদেরকে চিনতে পেরেছেন, তাদের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামী করা হয়েছে।”
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাদের চিনতে পেরেছেন, তারা কারা- সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “হামলাকারীরা সবাই স্থানীয় এবং হরতাল সমর্থনকারী। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আপনারা সবাই জানেন।”

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ