সমঝোতা না হলে নির্বাচন করা দুরূহ : সিইসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১৩ মার্চ ২০২২) : সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর আবার জোর দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে পড়বে। বড় দল নির্বাচন থেকে দূরে থাকলে অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে।

১৩ মার্চ (রোববার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে সিইসি এ কথা বলেন।

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উদ্দেশ্যে নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ সংলাপ শুরু হলো।
সংলাপে অংশ নিয়ে শিক্ষাবিদেরা বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন জরুরি। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা।

সংলাপে শিক্ষাবিদেরা নির্বাচনের তিন মাস আগে থেকে প্রশাসন ও পুলিশকে ইসির অধীনে আনা, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, ভোটারদের সচেতন করা, বিরোধী দলগুলোকে বারবার আমন্ত্রণ জানানো, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।

শিক্ষাবিদদের কেউ কেউ আবার বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন। এ জন্য রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।

প্রথম দিনের সংলাপে দেশের ৩০ জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইসি। তবে অংশ নিয়েছেন ১৩ জন। ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ ১৭ জন সংলাপে অংশ নেননি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কাজ থাকায় অংশ নিতে পারবেন না বলে ইসিকে জানিয়েছিলেন। আর আমন্ত্রিতদের মধ্যে দুজন ছিলেন দেশের বাইরে।

সংলাপে অংশ নিয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আপনারা যত যতœ করেই কাজ করেন না কেন, আমি শিওর গালি খেতে হবে। লোকজন অনেক কিছু বলবেই। তবে দিন শেষে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি আপনারা বলতে পারেন, আমি অনেস্ট ছিলাম, কাজটা সঠিক করেছি। তাহলে কে কী বলেছে তাতে মাইন্ড করবেন না। তাহলেই হবে।’

দলীয় সরকারের অধীনে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে মত দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। এই নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। বলেন, অনুসন্ধান কমিটি ১০ থেকে ২০ জনের নাম প্রকাশ করলে ভালো হতো। এখন যেভাবে কমিশন হয়েছে তা লুকোচুরি, ছলচাতুরী, দুরভিসন্ধিমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এসেছে; তা বলার মতো কারণ আছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ