রাষ্ট্রপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের আলোচনায় পরীক্ষিত দুই রাজনীতিক
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি (৮ ফেব্রুযারি ২০২৩) : বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন? রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে কে যাচ্ছেন বঙ্গভবনে? কার কপালে পড়বে ‘রাষ্ট্রপতি’র তিলক? এ নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। যদিও আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তবুও এ নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। হাটে মাঠে ঘাটে, রাজনৈতিক মঞ্চে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, প্রশাসনে সব আলোচনায় উঠে আসছে ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন’ প্রসঙ্গ। কারণ, কে হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের কারো সাথে আলোচনা করেননি। কেউ ঘুনাক্ষরেও জানতে পারেন-নি আগামীর মহামান্য রাষ্ট্রপতির নাম। তবে আলোচনার শীর্ষে এখন আওয়ামী লীগের তিন-বারের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর নাম। পরীক্ষিত এই রাজনীতিক যদি রাষ্ট্রপতি হয়ে বঙ্গভবনে যান, সেই ক্ষেত্রে শূন্য হবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এ ক্ষেত্রে আলোচনায় এগিয়ে আছেন দলের আর এক পরীক্ষিত এবং তৃণমূলের সংস্পর্শে থাকা ত্যাগি নেতা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। যদিও ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে ড. হাছান মাহমুদই হবেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। কারণ, তিনি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ নির্বাচিত হন। আলোচনায় রয়েছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের শূন্য পদও।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও মনে করেন, এই মুহুর্তে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য ওবায়দুল কাদের ছাড়া আর কাউকেই দেখছেন না তারা। দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও ত্যাগি নেতা ড. হাছান মাহমুদকেই তারা এগিয়ে রাখছেন।
‘রাষ্ট্রপতি’ প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। নির্বাচনের সময় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের উপযোগিতার সঙ্গে কাজ করা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিতে পারেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী অনুযায়ী, ‘সরকারের সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ কমিশনকে উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করিবে এবং এই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশাবলী জারি করিতে পারিবেন।’
আবদুল হামিদের উত্তরসূরি কে হতে যাচ্ছেন, সে ব্যাপারে এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে কোনো ইঙ্গিত নেই। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এখনো এ বিষয়ে তার সহকর্মীদের সঙ্গে কোন আলোচনা করেননি। তবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সভায় গতকাল রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি। তবে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদে যেহেতু নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে, সেহেতু এ দলেরই একজন প্রার্থীকে আব্দুল হামিদের উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচন করবেন দলের সদস্যরা।
নতুন রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছনে? সম্ভাব্যদের তালকিায় আছে ওবায়দুল কাদরেরে নামও। তিনি যদি রাষ্ট্রপতি হয়ইে যান তবে নতুন মুখ আসবে মন্ত্রিসভায়। সড়ক পরবিহন ও সেতু মন্ত্রণালয় পাবে নতুন মন্ত্রী। সেই সাথে আলোচনায় রয়েছে মন্ত্রিসভায় সম্ভাব্য ছোটখাটো রদবদল।
আওয়ামী লীগের টানা ৩ বারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নাম আলোচনায় উঠে আসার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্যতা এখনো আমার হয়নি।’
৩৫০ সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের হাতে আছে ৩০২টি। প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির হাতে ২৬টি আসন। ওয়ার্কার্স পার্টির ৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ ও গণ ফোরামের ২টি করে, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) হাতে ১টি করে আসন রয়েছে। বাকি ৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
বিএনপির ৭ নেতাও সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে তারা সম্প্রতি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
আবদুল হামিদ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বর্তমান মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে। সংবিধান অনুযায়ী, তাকে পুননির্বাচিত করার কোনো সুযোগ নেই।
সংবিধানের ৫০ (২) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ২ মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। এই ২ মেয়াদ পরপরও হতে পারে, আবার ২ মেয়াদের মাঝে সময়ের ব্যবধানও থাকতে পারে।