জেসমীনকে আটক-জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত র্যাব সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ
আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (৫ এপ্রিল ২০২৩) : নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর অভিযোগ তদন্ত করতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি হাইকোর্ট এই কমিটির তদন্তকাজ চলাকালে ওই নারীকে আটক ও ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা র্যাব সদস্যদের বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে র্যাব সদরদপ্তরে আনতে নির্দেশ দিয়েছেন।
৫ এপ্রিল (বুধবার) র্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় করা রিটের শুনানিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. মাহাবুবুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ তদন্ত কমিটি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ কমিটিতে নওগাঁর দুজন বিচারককে রাখতে বলা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও সুরতহাল প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন।
গত ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। ২৪ মার্চ সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী পদে চাকরি করতেন।
র্যাবের ভাষ্য, সুলতানা জেসমিনের নামে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। তিনি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল। আটকের পর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে তাকে নওগাঁর হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। গত ২৪ মার্চ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। তবে পরিবারের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর জানা যায়, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হক একটি মামলা করেছেন, যেটি রেকর্ড করা হয়েছে ২৩ মার্চ বিকেলে। এ মামলার আসামি জেসমিন ও তার কথিত সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আল-আমিন।