কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে শাহবাগে উল্লাস
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আপিলের রায়ে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ হওয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়েছে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। এই জামায়াত নেতার রায়কে কেন্দ্র করেই গত ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগের আন্দোলনের সূচনা ঘটে।
মঙ্গলবার সকালে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার খবর পাওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগে আগে থেকে অবস্থান নেয়া মঞ্চের কর্মীরা করতালি দিয়ে তা স্বাগত জানায়। সেই সঙ্গে শুরু হয় স্লোগান।
শাহবাগ জাদুঘরের সামনে গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থান থাকলেও উপস্থিতি কম দেখা গেছে। মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, মারুফ রসূলসহ সংগঠকরা রয়েছেন সেখানে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ইমরান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার নিয়ে আমাদের মনে যে শঙ্কা ছিল, তা দূর হয়েছে।”
রায় দ্রুত কার্যকরের তাগিদ দেন তিনি। সেই সঙ্গে অন্য যুদ্ধাপরাধীদের আপিল দ্রুত নিষ্পত্তির প্রত্যাশাও সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি রেখেছেন তিনি।
“এভাবে চললে একটা একটা করে মামলা নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লেগে যাবে,” মন্তব্য করে আপিল বিভাগকে গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে অনুরোধ করেন ইমরান।
জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি তুলে তিনি বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী এই রাজনৈতিক দলটির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে দ্রুততর সময়ে তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।”
রায়ের আগেই সোমবার রাতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিল যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির আন্দোলনকারীরা। তবে বৃষ্টির কারণে রাতে কর্মসূচি স্থগিত করে। সকালে পুনরায় অবস্থান শুরু হয়।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কাদের মোল্লার দেখানো ‘ভি’ বা বিজয় চিহ্ন খবরে প্রকাশিত হওয়ার পর রাজধানীর তরুণরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে বিরল এক সমাবেশের সৃষ্টি করে।
দেশ-বিদেশে বাংলা বসন্ত নামে পরিচিত পাওয়া সর্বস্তরের মানুষের অভূতপূর্ব এই অহিংস সমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবি ওঠে।
নানা ঘটনা-প্রবাহের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি চলার পর ২১ ফেব্রুয়ারি টানা অবস্থানের ইতি টানা হয়। তারপর থেকে রায়ের আগের দিন থেকে অবস্থান চলছে।
ইমরান বলেন, “ট্রাইব্যুনালের রায়ের দিন কাদের মোল্লা যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে, ফাঁসির রায় তারই জবাব হয়েছে।”
এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার আইন পরির্বতন করে আসামির যে কোনো সাজার বিধান রেখে আইন সংশোধন করে। আগের আইনে যে কোনো রায়ের বিরুদ্ধে আসামির আপিলের সুযোগ থাকলেও খালাস না হলে আপিলের সুযোগ প্রসিকিউশনের ছিল না।