সুষ্ঠু নির্বাচনের জোরালো পদক্ষেপে আমরা উন্মুখ : আজরা জেয়া
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১৫ জুলাই ২০২৩) : অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জোরালো পদক্ষেপে বাংলাদেশের অংশীদারদের সমন্বয় অব্যাহত রাখতে উন্মুখ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া। তিনি বলেছেন, আসুন, বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংসতা পরিহার করে সত্যিকারের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থনের আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি।
আড়াই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আজরা জেয়া এসব কথা বলেন।
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করা। তবে সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা বর্জনের বিষয় বাংলাদেশের জনগণের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেন আজরা জেয়া। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা দেখছি না। আমি শুধু বলতে চাই, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিই না।’
র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে এক প্রশ্নে আজরা জেয়া বলেন, অতীত ও বর্তমানের অপকর্মের জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে র্যাবের অর্থবহ সংস্কার করতে হবে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানিয়ে জেয়া বলেন, এ ক্ষেত্রে সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বাংলাদেশে আসার আগে তার ভারত সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে আজরা জেয়া বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার অংশ হিসেবে সে দেশ সফর করেছেন। পাশাপাশি তিব্বত ইস্যুতে বিশেষ সমন্বয়ক হিসেবে তাঁর দ্বৈত ভূমিকার অংশ হিসেবে ভারতে গেছেন।
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া :
২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আজরা জেয়া বলেন, এটি সিদ্ধান্ত ও তথ্যের সতর্ক গবেষণা ও বিবেচনার ফল।
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোরপূর্বক গুমের ঘটনা কমার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছি।’
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে আজরা জেয়া বলেন, অতীত ও বর্তমানের অপকর্মের জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে র্যাবের অর্থবহ সংস্কার করতে হবে। সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনা করা হবে।
বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এই কূটনীতিক বলেন, তারা মানবাধিকার, ত্রুটি ও অপব্যবহারের ওপরও কাজ করেন; যাতে তাঁরা অন্যের অধিকার লঙ্ঘনকারীদের সংশোধন করতে পারেন এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব নিয়েও কথা বলেন আজরা জেয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারত্ব বিস্তৃত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।’
ভিসা নীতি সম্পর্কে আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অঙ্গীকারকে সমর্থন দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের আলোচনায় এটি খুব ইতিবাচকভাবে এসেছে।’
নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন উল্লেখ করে আজরা জেয়া বলেন, ‘আমরা মূল্যায়ন করছি এবং আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব। যুক্তরাষ্ট্র এই কাজটি সারা বিশ্বে করে থাকে।’