আ’লীগ-বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে অবরুদ্ধ রাজধানী

আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২৮ অক্টোবর ২০২৩) : আবারও রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন নিয়ে সংঘর্ষে উত্তপ্ত রাজধানী। নয়াপল্টনে বিএনপির মহা সমাবেশ, বায়তুল মেকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর (শনিবার) বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখি সংঘর্ষে অবরুদ্ধ ছিলো ঢাকা। সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য। পুলিশসহ আহত হয়েছেন দুই শতাধিক নেতা-কর্মী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও সংঘর্ষের জেরে মঞ্চে দাড়াতে পারেনি বিএনপির নেতা কর্মীরা। মহাসমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। হরতালে সমর্থণ দিয়েছে নাগরিক ঐক্যে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণতন্ত্র মঞ্চসহ আন্দোলনরত সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। আর হরতালের প্রতিবাদে সারাদেশে শন্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

পল্টন মোড়ে পল্টনে ত্রিমুখী সংঘর্ষ : ২৮ অক্টোবর (শনিবার) দুপুর আড়াইটার রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরস্পরের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন মোড় এবং রাজধানীর অন্যান্য স্থানে বিএনপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। এসব ঘটনায় বিএনপির বহু নেতাকর্মীর পাশাপাশি পুলিশ ও সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ৪১ জন সদস্য আহত হয়েছেন।

এর আগে বিএনপির পল্টনের সমাবেশে ধাওয়া দেয় পুলিশ। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সমাবেশের দুইদিকে অবস্থান নেয় পুলিশ। এরপর বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়া হয়। সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট আওয়াজ শুনে বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থল থেকে বেরিয়ে যাওয়া শুরু করেন।

তবে নেতারা তখনো স্টেজে অবস্থান করছিলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলামসহ সিনিয়র নেতাদের পুলিশি হামলার মুখেও স্টেজে বসে থাকতে দেখা যায়।

অবশ্য কিছু সময় পর কেন্দ্রীয় নেতারা সবাই স্টেজ থেকে নেমে যান এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন।

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবর দুপুর ২টা থেকে শুরু হয় বিএনপির সমাবেশ। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। তার আগে বেলা ১১টা থেকে মহাসমাবেশ মঞ্চে চলে গান-বাজনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ স্থলে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টার আগেই নয়াপল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, বিজয় নগর ও ফকিরাপুল এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীতে লোকারণ্য হয়ে যায়।

কয়েক সপ্তাহ আগে আজ ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিএনপি। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ উত্তপ্ত ছিল। বিএনপির মহাসমাবেশের পাল্টা হিসেবে রাজধানীতে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে সেই সমাবেশ বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলছিল।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ