উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আলীগে দ্বন্দ্ব

আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২২ মার্চ ২০২৪) : অভ্যন্তরীণ বিরোধ কমাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেওয়ার অবস্থানেই রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু এই কৌশলের কারণে ভোটের অনেক আগে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বিভেদ প্রকাশ্যে এসেছে। কোনো কোনো জায়গায় সংঘাতও হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ গতকাল ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার খোকসায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে দলেরই আরেক নেতাকে তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলটির নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়া এবং প্রার্থী মনোনয়নে দলের কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণ না রাখার কৌশলে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘাত আরও বাড়তে পারে।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, প্রার্থী মনোনয়নে দলের কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। কিন্তু কোনো সংঘাত যাতে না হয়, সে জন্য ঈদের পরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের বৈঠক করা হবে। সেই বৈঠক থেকে দলের স্বতন্ত্র সব প্রার্থীর জন্য কিছু নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।

জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র কৌশলের কারণে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, এখন উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেওয়ার পেছনে সেই বিভেদ কমানোই প্রধান লক্ষ্য বলে বলা হচ্ছে।

কিন্তু কোনো উপজেলায় যখন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের বেশ কয়েকজন প্রার্থী হবেন, তখন সেখানে দলীয় নির্দেশনা কতটা মানা হবে, সেই প্রশ্নও রয়েছে দলটিতে। এ ছাড়া দল কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো হস্তক্ষেপ না করায় প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবে বলে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছেন। কিন্তু মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অনেকে তাঁদের নিজেদের এলাকায় পছন্দের প্রার্থীর পক্ষ নিচ্ছেন বলে এখনই নানা অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে আসছে। এমন পটভূমিতে প্রশাসন কতটা নিরপেক্ষ ভূমিকা নেবে, সেই প্রশ্নও উঠছে দলটির তৃণমূলে।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে ভোটার উপস্থিতি দেখাতে দলীয় প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কৌশল নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তৃণমূলে তৈরি হয়েছে বিভক্তি এবং অনেক জায়গায় সংসদ সদস্য ও তাঁদের পাল্টা পক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে। সেই বিভেদের জেরে এখনো কোনো কোনো জায়গায় সংঘাতের ঘটনাও ঘটছে। ১৬ মার্চ বরিশালের হিজলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার ঘটেছে। সেখানে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে দলের বিভেদের জেরে এই হত্যাকা- হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ