তীব্র সমালোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
তাসনীয়া আজাদ, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২৬ এপ্রিল ২০২৪) : ‘নানা অনিয়ম ও বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি-গ্রুপ, স্বার্থান্বেষী মহল ও ব্যাংক পরিচালকরা এক হয়ে সাধারণ মানুষের আমানতের অর্থ লুটেপুটে খাচ্ছেন। এতে করে সংকটে পড়েছে দেশের আর্থিক খাত। দুর্বল হয়ে পড়েছে অনেক ব্যাংক। এসব অনিয়মের বিচার না করে জনগণের অর্থ দিয়ে তাদেরই সহযোগিতা করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব তথ্য যেন গণমাধ্যমে না আসে, তাই প্রভাবশালীদের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ নিয়মের নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।’ গত ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এসব মন্তব্য করেন ব্যাংক বিটে কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধজ্ঞার বিষয়টি তীব্র সমালোচনায় পড়েছে। দেশের অর্থনীতিবীদ এবং সিনিয়র সাংবাদিকরা বিষয়টিতে দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ব্যাংক বিটের সাংবাদিকরা জানান, এতদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিসিপশন ডেস্কের রেজিস্ট্রার খাতায় একজন সংবাদকর্মী তার নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে স্বাক্ষর করে পাস ইস্যুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। গত ৫৩ বছর ধরে সংবাদকর্মীরা এ নিয়মেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করছেন।
কিন্তু গত এক মাস ধরে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথমে বিভিন্ন সংস্থার পর্যবেক্ষণের কথা বলে কালক্ষেপণ করেছিল। এখন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
বিষয়টিতে প্রতিবাদ জানিয়ে গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন অর্থনীতি বিটের সংবাদকর্মীরা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা অবস্থান নেন। বিষয়টি সমাধান করতে সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। তবে, এ বিষয়ে কোনো সমাধান দেননি গভর্নর।
বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে, আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।’ অর্থাৎ সরাসরি ‘না’ বলে সাংবাদিকদের প্রবেশে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।