লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষ
জেলা প্রতিনিধি (লক্ষ্মীপুর), এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২ আগস্ট ২০২৪) : লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। ২ আগস্ট শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে শহরের উত্তর তেমহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এক যুবককে অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে দেখা গেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করা ব্যক্তির নাম মো. সুমন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন ওরফে টিপুর গাড়িচালক। টিপু লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এম এ তাহেরের ছেলে।
জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাউদ্দিন টিপু বলেন, ‘অস্ত্রটি আমার লাইসেন্স করা। সংঘর্ষের পর গাড়িচালককে দিয়ে অস্ত্রটি বাসা পাঠিয়েছি। এ সময় কেউ একজন ছবিটি তুলেছেন। সংঘর্ষের জন্য অস্ত্রটি ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়।’
তবে সালাউদ্দিন টিপুর বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার মিল ছিলো না। সংঘর্ষেও সময়ে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সালাউদ্দিন টিপুর চালক সুমন অস্ত্র হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, জুমার নামাজ শেষে জেলা শহরের চক মসজিদ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষেই তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে বের হয়ে মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন এবং তাদের দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এরপর মসজিদের সামনে থেকে বাজারের বিভিন্ন সড়কে স্লোগান দিয়ে সাধারণ মুসল্লি ও আন্দোলনের উদ্দেশে আসা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার ভেতরে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মিছিল শেষে হলে আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হন। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান শুরু করেন। মিছিলটি উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসার সামনে গেলে মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এতে পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তারাও শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়েন। এর মধ্যে সাত-আট শিক্ষার্থীকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটপাটকেলে ছাত্রলীগের দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ওই সময় অস্ত্র হাতে এক যুবক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াছিল মজুমদার ফারুক বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। অস্ত্র হাতে যুবকের ছবিটি দেখেছি। তাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’