সংস্কারের সময় জানার অধিকার জনগণের আছে: তারেক রহমান

বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১৬ ডিসেম্বর ২০২৪) : রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের আর কত মাস প্রয়োজন, তা জনগণের জানার অধিকার আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, সেটি অবশ্যই গণ–আকাঙ্ক্ষাবিরোধী হবে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

আলোচনা সভায় তারেক রহমান প্রশ্ন রাখেন, অন্তর্র্বতী সরকার আসলে কী করতে চাইছে? তিনি বলেন, সরকার জনগণের সামনে তাদের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করবে, এটি একদিকে জনগণের কাছে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে, অপর দিকে প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশীলতা বাড়াবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ–ও বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার তাদের সব কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কাছে যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে, জনগণও সরকারের প্রতি তত বেশি সমর্থন দেবে।

প্রায় প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যু অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ জোগাতে অনেকের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। এর পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূলের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা সমাজের প্রায় প্রতিটি মানুষ। প্রতিদিনের সংসারের ব্যয় মেটাতে জনগণকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সুতরাং জনজীবনের দুর্ভোগ কিংবা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্তর্র্বতী সরকার যদি শুধু সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে; তাহলে জনগণের কাছে সংস্কার আগে নাকি সংসার আগে—এই প্রশ্ন মুখ্য হয়ে উঠতে পারে।

তারেক রহমান বলেন, বর্তমানে জনগণের দুর্ভোগ মেনে নিলেও সরকারের বিরোধিতায় উচ্চবাচ্য করছে না। কারণ, জনগণ অন্তর্র্বতী সরকারকে সফল দেখতে চায়। তিনি মনে করেন, অন্তর্র্বতী সরকার নিজেরা নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না, তা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই প্রমাণ করতে হবে।

বিএনপি ইতিমধ্যে যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করেছে, তা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই ৩১ দফাকে ভিত্তি হিসেবে নিয়ে দল–মত, ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।

দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা তারেক রহমান বলেন, ‘অচিরেই নির্বাচনী রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। সেই যাত্রায় আপনাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী হচ্ছে গণতন্ত্রকামী জনগণ। আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন। জনগণকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।’

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের। আর ১৯২৪ সাল দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার। এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবারের বিজয় দিবস অবশ্যই অনেক বেশি আনন্দের, গৌরবের এবং অনেক বেশি অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আগামী বছরগুলো স্বাধীনতা কিংবা বিজয় দিবস শুধুমাত্র আনন্দ উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বা রাখা যাবে না। বরং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, আগামী বাংলাদেশের প্রতিটি স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবস হয়ে উঠবে জনগণের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দায় কিংবা প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি অর্থবহ দিন।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ