পদ্মায় ভাঙন ঠেকানোর আশ্বাস
মুন্সীগঞ্জে পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের সময় জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে এই আশ্বাস দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো নির্মাণের দর প্রস্তাবের সময় ঠিকাদারদের অনুরোধে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
আগে পদক্ষেপ নিলে নদী ভাঙন ঠেকানো যেত স্বীকার করে তিনি বলেন, আপাতত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় নদী ভাঙন রোধে কাজ করবে। সে লক্ষ্যে তারা ইতোমধ্যে জরিপের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
“যোগাযোগ মন্ত্রণালয় মাওয়ায় ৭০০ মিটার এলাকায় ভাঙন রোধে ৩২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়েছে। অনুমোদন পেলে আগমী ডিসেম্বর/জানুয়ারি নাগাদ কাজ শুরু হবে।”
সকালে ওবায়দুল কাদের মাওয়ায় এলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন। তারা অভিযোগ করেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কাজ করেনি বলে ঘাটে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ভাঙনের কারণে কিছুদিন ধরে মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
জনতার ক্ষোভের মুখে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যোগাযোগ মন্ত্রণালয় মাওয়া ভাঙন রোধে নৌ মন্ত্রণালয়কে প্রায় ৬ কোটি টাকা দিয়েছে। কাজ না হয়ে থাকলে তা নৌপরিবহনমন্ত্রীর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।”
ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষকে পদ্মা সেতুর কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য নির্মিত পুনর্বাসন কেন্দ্রে আশ্রয় দেয়ার আশ্বাস দেন যোগাযোগমন্ত্রী।
বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাঠামো নির্মাণে গত জুন মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকে সরকার। তিনটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এই সেতু নির্মাণের আগ্রহ দেখিয়েছে। এই প্রকল্পে দরপত্রে অংশ নিতে প্রাক যোগ্যতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান।
বর্তমান সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পদ্মা সেতু নির্মাণে ২০১১ সালে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি হলেও পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি ঝুলে যায়।
দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে চলতি বছর জানুয়ারিতে সরকার বিশ্ব ব্যাংককে ‘না’ বলে দেয়। এরপর নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে সরকার।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী শাসনের দরপত্র তিন দিন আগে হয়ে গেছে। প্রকল্পের আর কোনো দরপত্র ডাকার নেই বলে জানান যোগাযোগমন্ত্রী।
মাওয়ার ওপারে জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতু সংযোগ সড়কের কাজ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি।
মাওয়া পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন খান, মুন্সীগঞ্জের সড়ক বিভাগের নির্বাহী পরিচালক নুরুল হোসেন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল আহমেদ, মাওয়ায় বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক এসএম আশিকুজ্জামান প্রমুখ।