দাবি আদায়ে প্রয়োজনে সচিবালয় ঘেরাও
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ তেরদফা দাবি মানতে প্রয়োজনে সচিবালয় ঘেরাও করা হবে বলে জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি বাবুনগর মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলাম আয়োজিত ওলামা মাশায়েক সম্মেলন শেষে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
সম্মেলনে সারাদেশ থেকে হেফাজত ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলন শেষে হেফাজত নেতা মাওলানা ছলিম উল্লাহ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আটদফা দাবিও পেশ করেন।
এর মধ্যে রয়েছে- ২৫ সেপ্টেম্বর প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কওমি মাদ্রাসা বিল সংসদে পাস করানোরে সরকারি চেষ্টা বন্ধের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে দেয়া হবে।
১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ওলামা সুধী সমাবেশ ও পেশাজীবী সংলাপ এবং ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে দুইদিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলন করারও ঘোষণা দেন মাওলানা আজিজুল।
আটদফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ১৩দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন, ৫ মে শাপলা চত্বরে আলেমদের ওপর পরিচালিত অভিযানের স্বাধীন সুষ্ঠু ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও কমিটি গঠন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি ওয়াক্কাসসহ গ্রেপ্তার সকল নেতাকর্মীর মুক্তি ও দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার।
এছাড়া পশ্চিমা সংস্কৃতির আলোকে তৈরি নারী নীতিমালার কোরআন ও ইসলামবিরোধী ধারা বাতিল করারও দাবি জানিয়েছে হেফাজত।
সম্মেলনে বলা হয়, দেশের মাদ্রাসায় ছাত্র কমানোর তথাকথিত আন্দোলন সম্পকির্ত প্রধানমন্ত্রী পুত্রের ধৃষ্টতামূলক বক্তব্য এবং আহমদ শফীর বিরুদ্ধে লাগামহীন কটুক্তিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
ফটিকছড়ি উপজেলার বাবুনগর মাদ্রাসায় (আলজামেয়া আবদুল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায়) হওয়া এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির আহমদ শফী।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-সম্পাদক মাওলানা মুসালিম, নগর সভাপতি হাফেজ তাজুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা সভাপতি সরওয়ার কামালসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হেফাজত নেতারা।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, “সরকার শাপলা চত্বরে গুলিবর্ষণ ও ভয় দেখিয়েছে। এখন কওমি মাদ্রাসাকে সনদের লোভ দেখাচ্ছে। সরকার কওমি মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণ করলে এটি ধ্বংস হবে। যদি এমন হয় লক্ষ লক্ষ লাশ পড়বে।”
রক্তের বিনিময়ে হেফাজতে ইসলাম তা রক্ষা করবে জানিয়ে বাবুনগরী বলেন, “ব্রিটিশ সরকারও চেষ্টা করেছিল কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করতে কিন্তু পারেনি। এ সরকারের সেখান থেকে শিক্ষা নেয়া দরকার।”
হেফাজতের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয় উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, “এ লড়াই নাস্তিকদের বিরুদ্ধে। শাপলা চত্বরে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অনুমতি দিয়েছিল। শাহবাগীরা অনুমতি ছাড়া দেড় থেকে দুইমাস থাকতে পারে, আর আমরা একদিন থাকলে অসুবিধা কি ছিল।”
আগামীতে যে সরকারই আসুক না কেন তেরদফা মানতে হবে বলেও জানান তিনি।