রাবি ক্যাম্পাসে গোলাগুলিতে ৩ জন আহত

rabi rajshahi University রাবি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে গোলাগুলিতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।

রোববার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও শহীদুল্লাহ কলাভবনের কাছে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার ছবি তোলার সময় নিউ এইজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাজিম মৃধা কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মীর মারধরের শিকার হন।

গোলাগুলির পর শিবিরের মতিহার হল শাখার সভাপতি আবু সুফিয়ান ও বিজ্ঞান অনুষদের সভাপতি আল ইমরানকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়া ভাষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাধারণ শিক্ষার্থী ফিরোজ আহমেদও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকেও একই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে ২০-২৫ জন শিবিরকর্মী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছন দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে টেন্টে বসা ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের পরিচয় জানতে চায়। এ সময় শিবির কর্মীরা গুলি করতে করতে দৌড়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।

এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরাও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এর কিছুক্ষণ পর পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে যায়। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরাও সেখানে উপস্থিত হলে আবার কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। এতে ওই ভবনে আটকে পড়া আবু সুফিয়ান, আল ইমরান ও ফিরোজ আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন।

মতিহার থানার ওসি আবদুস সোবহান এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “আমি এখনো গোলকধাঁধাঁর মধ্যে আছি। কে গুলি ছুড়েছে তা আমরা এখনো জানি না।”

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এদিকে এ ঘটনার ছবি তোলার সময় ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাজিম মৃধার ক্যামেরা কেড়ে নেন কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী। পরে তাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন নাজিম।

তিনি বলেন, “গুলির সময় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি করছিল। আমি ছবি নেয়ার জন্য গেলে ছাত্রলীগ আমার ওপর হামলা করে। পরে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে তারা আমার ক্যামেরা ফিরেয়ে দেয়।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তারিকুল হাসান মিলন এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করেছে, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কিছু নেতা-কর্মী ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য গুলি ছুড়ছে। এরপর ছাত্রলীগ তাদের পাল্টা ধাওয়া দিলে সেখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।”

প্রক্টর জানান, আহত ফিরোজকে তিনি নিজের গাড়িতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। পরে সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনের ওপর হামলার ঘটনায় দুপুরে তারা মানববন্ধন করতে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে যাওয়া শিবিরকর্মীরা কটূক্তি করে। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা এগিয়ে গেলে শিবির কর্মীরা গুলি শুরু করে।

অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের তথ্য সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলু দাবি করেন, তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্লাসে যাওয়ার সময় ছাত্রলগী হামলা চালায়। এতে তাদের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হন।

প্রক্টর তারিকুল হাসান মিলন বলেন, “ক্যাম্পাসে যারাই গুণ্ডামি করুক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।”

ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন,  “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ