আলীমের রায় যে কোনো দিন, জামিন বাতিল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের যুদ্ধাপরাধের মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে তার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদনও নাকচ করা হয়েছে।
একাত্তরে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, দেশত্যাগে বাধ্য করা এবং এসব অপরাধে উস্কানি ও সহযোগিতার ১৭টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে।
আসামি ও প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
এখন যে কোনো দিন এ মামলার রায় দিতে পারে ট্রাইব্যুনাল। আর জামিন বাতিল হওয়ায় জিয়াউর রহমানের আমলের এই মন্ত্রীকে যেতে হবে কারাগারে।
গত বছরের ১১ জুন ৭ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগে আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।
এগুলোর মধ্যে ১৫টিতে বিভিন্ন ঘটনায় মোট ৫৮৫ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, আটক ও দেশান্তরে বাধ্য করার ঘটনায়।
হত্যার অভিযোগের ১৫টি ঘটনার মধ্যে তিনটি গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে, যাতে মোট ৪০৬ জনকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের।
এছাড়া যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির’ জন্যও অভিযুক্ত হয়েছেন আব্দুল আলীম।
২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর চার দিন পর অশীতিপর এই ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা মুচলেকায় ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেয়া হয়, যার মেয়াদ পরে বাড়ানো হয় কয়েক দফায়।
গত আড়াই বছর জামিনে মুক্ত আলীম আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বনানীতে তার ছেলের বাড়িতে অবস্থান করেন। ফয়সাল আলীম মোবাইল ফোনের কনটেন্ট প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান উইনটেলের মালিক।
২০১২ সালের ৯ জুলাই এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। জব্দ তালিকার সাক্ষীসহ প্রসিকিউশনের মোট ৩৫ জন আলীমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে তার ছেলে সাজ্জাদ ছাড়াও সাক্ষ্য দেন জয়পুরহাটের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ চৌধুরী ও মো. মোজাফফর হোসেন।
১৯৭৫ ও ১৯৭৭ সালে জয়পুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আলীম। ১৯৭৯, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি বিএনপির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জিয়াউর রহমানের সরকারে প্রথমে বস্ত্রমন্ত্রী এবং পরে যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন আলীম।