পোশাক খাতে ন্যায্য মজুরি চায় এফবিসিসিআই

sromik somabesh স্রমিক সমাবেশ গার্মেন্টস garmentsরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দ্রুত একটি ‘ন্যায্য’ মজুরি কাঠামো ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।

রোববার সংগঠনটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “পোশাক শিল্প ও শ্রমিকদের বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে একটি ন্যায্য মজুরি কাঠামোর প্রতি এফবিসিসিআই পূর্ণ সমর্থন করে। কেননা শ্রমিকরাই উৎপাদনের মূল কারিগর।”

পোশাক শ্রমিকদের সর্বশেষ মজুরি বাড়ানো হয় ২০১০ সালে। সে সময় এ খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি এক হাজার ৬৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়।

গত মে মাসে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার।

পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ন্যূনতম বেতন তিন হাজার ৬০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। তবে এ শিল্পের শ্রমিক সংগঠনগুলো আট হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চেয়েছে তারা।

সরকারের মজুরি বোর্ড ইতোমধ্যে উভয়পক্ষকে নিয়ে কয়েকটি বৈঠক করলেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।

এদিকে সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখিয়ে আসছে শ্রমিকরা।

এফবিসিসিআইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকার বিজিএমইএ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মজুরি কাঠামো বিষয়ে দ্রুত সমঝোতায় আসবে বলে এফবিসিসিআই আশা করে।”

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্থিতিশীলতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য  সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

বাংলাদেশের ২০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক খাত একটি ‘ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “বিশ্বমন্দা ও অভ্যন্তরীণ বহু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে পোশাক খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন বাজার সৃষ্টি, নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং জিএসপি সংক্রান্ত প্রতিকূলতা কাটাতে সরকার ও বেসরকারিখাত একসঙ্গে অব্যহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”

তাজরীণ ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১২ শ’র বেশি শ্রমিকের মৃত্যুর পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ ও মজুরির বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনায় আসে। কয়েকটি শ্রমিক সংস্থার দাবির মুখে বাংলাদেশি পণ্যে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র, যদিও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শুল্কমুক্ত এই সুবিধা পেত না।

যে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুর্নবহাল রাখার জন্য সরকারের পাশাপাশি এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ ‘আন্তর্জাতিক মহলে জোর তৎপরতা’ চালাচ্ছে, সেই সময় মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ খুবই ‘উদ্বেগজনক’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

“এই অসন্তোষকে পুঁজি করে কিছু সংখ্যাক দুস্কৃতকারী সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে মালিকরা পোশাক করাখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে, যা আমাদের কারো কাম্য নয়।”

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছে এফবিসিসিআই।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ