সাঈদীর মামলায় আপিল শুনানি শুরু

sayedee সাইদীরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ আব্দুল কাদের মোল্লার মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর এবার একাত্তরে খুন-ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে।

আপিল দায়েরের প্রায় ৬ মাসের মাথায় মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ বিচারকের বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।

যুদ্ধাপরাধ আইনে আপিল নিষ্পত্তিতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে সে সময় লেগেছে প্রায় আট মাস।

কাদের মোল্লার আপিলের শুনানির শুরুর দিকে এই সময়সীমা মানার আগ্রহও দেখিয়েছিল আদালত। তবে পরে বলা হয়, এই সীমা নির্দেশনামূলক, বাধ্যতামূলক নয়।

মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদীর আপিলের শুনানি শুরুর আগের দিন তিন সপ্তাহ সময় চেয়ে একটি আবেদন করেন জামায়াতে ইসলামীর এই নেতার আইনজীবীরা, মঙ্গলবার তা খারিজ হয়ে যায়।

সকালে শুরুতেই ওই আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

ওই আবেদন খারিজের পর আদালত আপিলকারীদের শুনানি শুরু করতে বলে। তখন সাঈদীর আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক শুনানি শুরু করেন।

শুনানিতে তিনি কেস হিস্ট্রি, সূচনা বক্তব্য শেষ করে ট্রাইব্যুনালের রায় পড়া শুরু করেন। ১২০ পৃষ্ঠা রায়ের প্রথম ২১ পৃষ্ঠা পড়ে শোনান। বুধবার আবার শুনানি হবে।

গত ৩০ জুলাই সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, ১৭ সেপ্টেম্বর সাঈদীর মামলার আপিল শুনানি শুরু হবে। তবে ওইদিন ৫ বিচারকের বেঞ্চ এই মামলায় ‘পাসড ওভার’ দেয়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের রায়ে ২০টি অভিযোগের মধ্যে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দেয়ার দুটি অভিযোগে তাকে ওই দণ্ড দেয়া হয়।

আরো ছয়টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে আদালতে প্রমাণিত হলেও অন্য অভিযোগে ফাঁসির আদেশ যাওয়ায় সেগুলোতে কোনো দণ্ড দেয়নি আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ মার্চ আপিল করেন সাঈদী।

অন্যদিকে ওই ছয় অভিযোগে তার শাস্তি চেয়ে আপিল করে প্রসিকিউশন। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল যে ১২টি অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দিয়েছে, সেগুলোতেও আপিলে ‘পূর্ণ ন্যায়বিচার’ চাওয়া হয়।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এই বেঞ্চেই জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার আপিল মামলার শুনানি হয়, যাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বদলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

প্রথমদিকে এই বেঞ্চে বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়াসহ মোট ছয় বিচারপতি ছিলেন। তিনি অবসরে যাওয়ার পর বর্তমানে পাঁচ বিচারপতি রয়েছেন। আপিল শুনানির দিন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পরিবর্তে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ওই বেঞ্চে আসেন।

২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর তৃতীয় রায়ে সাঈদীর ফাঁসির রায় আসে। ওই রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা সহিংস বিক্ষোভ দেখায়। সরকারি হিসেবে এতে পুলিশসহ নিহত হন ৭০ জনেরও বেশি মানুষ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ