রামপালে ভিত্তি প্রস্তর পড়ে থাকবেঃ আনু মুহাম্মদ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা : রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলে প্রস্তরই পড়ে থাকবে, সরকারের ভিত্তি থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যু-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চে বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরে এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
‘সুন্দরবন রক্ষায় যেকোনো মূল্যে সর্বনাশা রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প রুখতে হবে’ – স্লোগানকে সামনে রেখে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে লংমার্চ শুরু করেছে জাতীয় কমিটি। সরকার রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই প্রকল্পটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে জাতীয় কমিটি।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী জানান, আগামী ২২ অক্টোবর বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। আর এ ঘোষণা শোনার পরই লংমার্চ চলাকালীন ফরিদপুরে এক জনসভায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আনু মুহাম্মদ।
প্রায় ১৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার গত এপ্রিল মাসে ভারতের সঙ্গে তিনটি চুক্তি করেছে। জ্বালানি উপদেষ্টা এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে কয়েকটি সংগঠনের ডাকা লং মার্চ এখন রামপালের পথে রয়েছে।
বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, “বিশ্বে প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে যা দিয়ে পরিবেশের খুব কম ক্ষতি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা যায়।” এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি। তিনি বলেন, “সুন্দরবনকে কোনোরকম ক্ষতিগ্রস্ত না করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।”
ইসলাম বলেন, বিশ্বে প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে যা দিয়ে পরিবেশের খুব কম ক্ষতি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা যায়। তিনি জানান, এই প্রকল্পে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা অত্যাধুনিক। এ বিষয়ে একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, দুর্গন্ধ এড়াতে একসময় টয়লেট ছিল নদীর তীরে কিন্তু এখন সময় ও বাস্তবতার কারণে শহরে লোকজন ঘরের ভেতরে টয়লেট নিয়ে বসবাস করছে।
পরিবেশবাদীদের অনেকেই বলছেন, এই প্রকল্প দেশের অন্য কোথাও করা যেতো। কারণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্যে বিকল্প জায়গা হতে পারে কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। এই উদ্বেগের জবাবে ইসলাম বলছেন, “বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। দেশটির প্রতিটি ইঞ্চি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।”
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্যে রামপালকে কেনো নির্বাচন করা হলো এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জলপথে পরিবহনের কথা বিবেচনা করে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ কেন্দ্রের জন্যে প্রচুর কয়লা প্রয়োজন।
তাহলে এই কেন্দ্রটি কেনো চট্টগ্রামে স্থাপনা করা হচ্ছে না -এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চট্টগ্রামেও হবে। ভবিষ্যতে এই এলাকাটি হবে বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের কেন্দ্র বা হাব। এ বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা এখনও চলছে।