লংমার্চ এখন বাগেরহাটে
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাগেরহাটঃ রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রবিরোধী তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির লংমার্চ বাগেরহাট পৌঁছেছে।
ঢাকা থেকে মঙ্গলবার যাত্রা শুরু করে খুলনা হয়ে শনিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরে ঢোকে লংমার্চকারীরা।
শহরের পর বিকালে ৪২ কিলোমিটার দূরে রামপালের দিগরাজ বাজারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের এই কর্মসূচি।
সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।
এই প্রকল্প বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে দাবি করে এর বিরোধিতা করছে বাম দল সমর্থিত তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি। তবে সরকার বলছে, পরিবেশের ক্ষতি না করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছেন।
লংমার্চের চতুর্থ দিনে শুক্রবার খুলনায় পৌঁছে আন্দোলনকারীরা। শনিবার সকালে নগরীর হাদিস পার্ক থেকে বাগেরহাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সকালে খণ্ড খণ্ড মিছিল জড়ো হতে থাকে শহীদ হাদিস পার্কে। রওনা হওয়ার আগে সেখানে সমাবেশ হয়।
সমাবেশে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, “লংমার্চে আমরা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছি। এই মানুষদের নিয়েই সুন্দরবন ধ্বংসকারী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার চেষ্টা প্রতিহত করব।”
নাগরিক এই কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহ আলম, সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স, ওয়ার্কাস পার্টির হাফিজুর রহমান ভুঁইয়া, মাহমুদুল হাসান মানিক ও রাগীব আহসান মুন্না, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাইফুল হক সমাবেশে ছিলেন।
বাগেরহাট পৌঁছানোর পর লংমার্চকারীদের স্বাগত জানান তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির জেলা সদস্য সচিব ফকরুল হাসান জুয়েলসহ স্থানীয় নেতারা।
লংমার্চকে কেন্দ্র করে বাগেরহাট শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে, রাস্তার দেয়ালে লাগানো হয়েছে পোস্টার।
শহরের পুরাতন কোর্ট চত্বরে সমাবেশের পর বিকালে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে মংলার দিগরাজ বাসস্ট্যান্ডে হবে সমাপনী সমাবেশ।
এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি সুশান্ত দাস বলেন, বাগেরহাট থেকে কয়েক হাজার মানুষ এই যাত্রায় লংমার্চে যোগ দেবে।
দিগরাজ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইতোমধ্যে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রথমে বাধা দেয়ার কথা শোনা গেলেও সমাবেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বাধা দেয়া হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা বলেন, “লংমার্চ শুরু থেকে যেহেতু কোথাও বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি, তাই বাগেরহাটেও তাদের প্রশাসন বাধা দেবে না। তবে তারা যেন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে।”
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী শুক্রবার এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, সমাবেশ থেকে কোনো ধরনের উশৃঙ্খল আচরণ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।