সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শেষ হল লংমার্চ

Lonmarch লংমার্চরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, বাগেরহাটঃ সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাদ দিতে সরকারকে হুঁশিয়ার করে শেষ হয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির লংমার্চ।

ঢাকা থেকে মঙ্গলবার যাত্রা শুরু করে শনিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাটের রামপালে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে দিগরাজ এলাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হয়।

এই লংমার্চ শুরুর পরদিন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী আগামী ২২ অক্টোবর ভারতের সঙ্গে যৌথ এই প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপনের কথা জানান।

সমাপনী সমাবেশে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এই লংমার্চে জনগণ সুন্দরবন ধ্বংসকারী এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। যদি এরপরও সরকার ভিত্তিস্থাপন করে, তবে জনগণ তা উপড়ে ফেলবে।

সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।

এই প্রকল্প বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে দাবি করে এর বিরোধিতা করছে বাম দল সমর্থিত তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি। তবে সরকার বলছে, পরিবেশের ক্ষতি না করেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

জ্বালানি উপদেষ্টার ঘোষণার পরপরই লংমার্চকারীরা প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন প্রতিহতের ঘোষণা দেয়।

দিগরাজের সমাবেশ থেকে সরকারকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, তা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

তিন প্লাটুন পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের এই সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়। এতে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির নেতা ছাড়াও বাম দলগুলোর নেতারা বক্তব্য রাখেন।

লংমার্চের চতুর্থ দিনে শুক্রবার খুলনায় পৌঁছে আন্দোলনকারীরা। শনিবার সকালে নগরীর হাদিস পার্ক থেকে বাগেরহাটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়।

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সকালে খণ্ড খণ্ড মিছিল জড়ো হতে থাকে শহীদ হাদিস পার্কে। রওনা হওয়ার আগে সেখানে সমাবেশ হয়।

সমাবেশে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, “লংমার্চে আমরা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছি। এই মানুষদের নিয়েই সুন্দরবন ধ্বংসকারী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার চেষ্টা প্রতিহত করব।”

দুপুর ১২টার দিকে বাগেরহাট শহরে পৌঁছানোর পর লংমার্চকারীদের স্বাগত জানান তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির জেলা সদস্য সচিব ফকরুল হাসান জুয়েলসহ স্থানীয় নেতারা।

লংমার্চকে কেন্দ্র করে বাগেরহাট শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত বিলবোর্ড লাগানো হয়, রাস্তার দেয়ালে লাগানো হয় পোস্টার।

শহরের পুরাতন কোর্ট চত্বরে সমাবেশের পর বিকালে ৪২ কিলোমিটার দূরের বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন দিগরাজের দিকে রওনা হয় লংমার্চ।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ