ক্ষমতা পেলে পদ্মায় সেতু দেব
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঝিনাইদহঃ ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যেতে পারলে তার সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
তিনি দাবি করেন, তার আমলেই দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ২৩ বছরে দেশে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা মানুষকে শান্তি দিতে পারেনি।
ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাইস্কুল মাঠে শনিবার বিকালে জেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক জনসভায় এরশাদ এ সব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, “নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে। অস্ত্র ও টাকার কারণে ভালো মানুষ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন না। ব্যক্তি নয় দলকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে দল সংসদে আসন পাবে। আমরা ক্ষতায় গেলে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। দেশে আগের মতো উন্নয়ন হবে। দেশে শান্তি ফিরে আসবে।”
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ড. এম হারুন অর রশীদ।অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, সুনীল শুভ রায়, আহসান হাবিব লিংকনসহ স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতারা।
এরশাদ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে যে সমস্ত দল আছে তাদের একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই দুই দল বাদে দেশকে রক্ষা করতে আমার দল নির্বাচন করবে। আপনারা আমার সাথে থাকবেন।”
এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে ড. হারুন অর রশীদকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেন।
তিনি আরও বলেছেন, ‘সবাই আমাকে স্বৈরশাসক বলে, কিন্তু গত ২৩ বছরে আপনারা কী পেয়েছেন। মানুষ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়, আর আমরা চ্যাম্পিয়ন হয় দুর্নীতিতে । আমার শাসন আমলে কোনো দুর্নীতি হয়নি, শুধু উন্নয়ন হয়েছে।’ এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা মহাজোটে আছি নামেমাত্র।’
এরশাদ বলেন, ‘রামপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করে সরকার সুন্দরবন ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির জন্য দেশে অনেক জায়গা আছে। বিশ্বের এ দর্শনীয় স্থানটি ধ্বংস করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ সরকারের আমলে পদ্মা সেতু হবে না। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে পদ্মা সেতু হবে।’ এরশাদ আরো বলেন, ‘নির্বাচনের কোনো আলামত আমরা দেখছি না। আদৌ নির্বাচন হবে কি না জানি না। হলে কখন কার অধীনে হবে তাও জনগণ জানে না। নির্বাচন নিয়ে আগে কখনো এ অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত।’
জনতার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগই আন্দোলন করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারাই আবারও ক্ষমতায় এসে কেয়ারটেকার সরকার বাতিল করেছে। এটা আওয়ামী লীগের দ্বিমুখি পলিসি।’ আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ এ সরকারের আমলে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছে। সারাদেশে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি চরমে পৌঁছেছে। মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই।’
প্রায় আধাঘণ্টা ধরে বক্তব্য দেন এরশাদ। তিনি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে দলের প্রার্থী হিসেবে ড. এম হারুন অর রশীদের নাম ঘোষণা করেন এবং লাঙল মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ড. এম হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন- দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবিব লিংকন, সুনীলশুভ রায়, মনিকা আলম প্রমুখ।