নিউইয়র্কেও শেখ হাসিনার অভিযোগ

sheikh shekh শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক hasinaজে. ইউ জুবায়ের, এবিসি নিউজ বিডি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বিরোধীদলই আলোচনার পরিবেশ বার বার নস্যাৎ করছে ।

তিনি বলেন,“আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের আহবান জানানোর জবাবে বিরোধী দলীয় নেতা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছিলেন,  শেখ হাসিনা পালাবারও পথ পাবে না। শুধু তাই নয়, বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধী জামায়াত আর হোফাজতে ইসলামকে সাথে নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করেছেন।”

শনিবার নিউইয়র্কের হোটেল হিলটনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছেন।

মহাজোট সরকার সততার সাথে দেশ পরিচালনা করছে বলেই দেশ আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মান অর্জন করেছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি  বলেন, বিএনপি দেশকে একটি সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দিয়েছিল, কিন্তু মহাজোট সরকার দেশকে উন্নয়নের প্রথম সারিতে নিয়ে গেছে। সারাবিশ্ব আজ বাংলাদেশকে সেই স্বীকৃতি দিয়েছে।

“আওয়ামীলীগ কথা দিলে কথা রাখে“ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচন সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মহাজোটকে ক্ষমতায় আনতে কাজ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, হত্যা,গুম, গণধর্ষণ, বোমাবাজির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে আগামীতেও মহাজোটকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনুন।

তিনি চট্রগ্রামের খুন হওয়া বিএনপিনেতা জামালউদ্দীনের উদাহরণ টেনে বলেন, বিএনপি নিজের দলের লোককেও হত্যা করতে ছাড়ে না।

বোরখা পরে কোরান শরিফ হাতে নিয়ে মা বোনদেরকে যারা বিভ্রান্ত করেছিল  তাদের মিথ্যাচারের প্রমাণ তুলে ধরতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিভ্রান্তিতে ভুগেছেন, তাদের উচিৎ ঐসব মিথ্যাবাদীদের কাছে মিথ্যাচারের জবাব  চাওয়া এবং ভোটের মাধ্যমে সমুচিত শিক্ষা দেয়া।

শেখ হাসিনা প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি নিউইয়র্ক রুটে বিমান চালু করার বিষয়ে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ বোয়িং-এর উড়োজাহাজ দুটো পাওয়ামাত্রই বিমান চালু হবে ।

নাগরিক সংবর্ধনায় এছাড়াও শীর্ষ আওয়ামীলীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফোয়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জাসদের মঈনুদ্দিন খান বাদল বক্তৃতা করেন্।

আমির হোসেন আমু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া  যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন । প্রবাসে জামায়াত-বিএনপি জোটের বিক্ষোভের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন না হলে এদের কেউই এদেশে আসতে পারতেন না। পাকিস্তান আমলে তাদের পূর্বপূরুষদের কেউই আসতে পারে নি। আর তাই  তাদেরকে নেহায়েত আহাম্মক ছাড়া আর কিছুই বলার নেই। মহাজোট আবারো নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আমীর হোসেন আমু।

তোফায়েল আহমেদ তার বক্তৃতায় অল্লাহর কসম দিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধান অনুযায়ীই হবে। তিন তার এবারের জাতিসংঘ সফরের কথা বলতে গিয়ে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার জাতিসংঘ সফরের স্মৃতিচারণ করে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। কান্নায় ভারী হয়ে আসা কন্ঠে তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘে এসে তার বিশ্ব পর্যায়ের নেতৃত্ব দেখে তিনি অভিভূত।
রাশেদ খান মেনন  আগামীতেও নির্বাচনে মহাজোটকে নির্বাচিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, তা নাহলে পুরো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। তিনি সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সরকারের নানা সাফল্য তুলে ধরে বলেন  দেশকে এগিয়ে নিতে মহাজোটের কোন বিকল্প নেই ।

মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, ড. কামাল হোসেনরা  তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে আদালতের রায় নিয়ে অসত্য বলছেন। এটা নেহায়েত রাজনীতির দ্বন্দ্ব নয়, এটা দেশের  অস্তিত্বের সংগ্রাম।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান এবং  স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা নজমুল ইসলাম, আব্দুর রহিম বাদশা, আব্দুল হাসিব মামুন, আব্দুস সামাদ আযাদ, মোহাম্মদ আলী, মহিউদ্দীন দেওয়ান, মুজিবুর রহমান মিয়া, শাহীন আজমল, এমদাদুর রহমান  প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রীর  সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনটি বড় পর্দায় মহাজোট সরকারের সাফল্যের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জোটের বোমাবাজি, নাশকতা ও মিথ্যাচারের নানান তথ্যাদি সম্বলিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। হোটেল শেরাটনের গ্রান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত এ নাগরিক সংবর্ধনায় প্রায় ৩ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ