আরো ৫ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের অনুমোদন
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রামপাল নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই মোট ১৫০০ থেকে ২৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার আরো পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
এসব কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ৬ থেকে ৭ টাকা।
বিল্ড-অন-অপারেট (বিওও) পদ্ধতিতে প্রস্তাবিত এ পাঁচটি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি করবে ওরিয়ন গ্রুপ, বাকি দুটি এস আলম গ্রুপ।
রোববার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এ পাঁচটি বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উদ্যোক্তা (স্পন্সর) নিয়োগের আর্থিক দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, “আনু মুহাম্মদ সাহেব যাই বলুক না কেন, আমাদের কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতেই হবে। কারণ কয়লা সবচেয়ে সস্তা। আমরা এটা ব্যবহারের চেষ্টা করছি।”
মুহিত জানান, নির্মাণ, কয়লা আমদানি ও উৎপাদনের যাবতীয় খরচ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানই বহন করবে। সরকার তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনবে ৬ থেকে ৭ টাকা দরে।
বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উদপাদনের দিকে ঝুঁকছে। এর আগে বিদ্যুত সচিব বলেছেন, পৃথিবীতে প্রায় ৪১ শতাংশ বিদ্যুত কয়লা থেকে এলেও বাংলাদেশে হচ্ছে এক শতাংশেরও কম।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে।
২২ অক্টোবর ওই কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপনের ঘোষণা রয়েছে, যা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং বিরোধী দল বিএনপি।
এছাড়া বেসরকারি খাতে চট্টগ্রাম ও মুন্সীগঞ্জে ৬০০ থেকে ১২৫০ মেগাওয়াটের তিনটি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি হয়েছে। ওরিয়ন গ্রুপ এসব কেন্দ্র নির্মাণের পর আমদানি করা কয়লায় তা চলবে।
রোববার অনুমোদন পাওয়া কেন্দ্রগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে মুহিত বলেন, “বিওও পদ্দতিতে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। কেন্দ্র নির্মাণ ও কয়লা জোগাড়ের দায়িত্ব পালন করবে কাজ পাওয়া কোম্পানিগুলোই।“
ওরিয়ন গ্রুপের পাওয়া তিনটি কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ঢাকা এলাকায় ৬০০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট ও ১০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি এবং চট্টগ্রাম এলাকায় ১০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কেন্দ্র রয়েছে।
আর এস আলম গ্রুপ চট্টগ্রাম এলাকায় ৬০০ থেকে ৮০০ মেগাওয়াট এবং বরিশালে ১০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র করবে।
চুক্তির পর কাজ পাওয়া কোম্পানিগুলো এসব কেন্দ্রের জন্য জমি নির্বাচন করে কাজ শুরু করবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
রোববারের বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘প্রথম পর্যায়’ প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার প্রস্তাবেও সম্মতি দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট ২৬৫ মিলিয়ন ডলারে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ভূমিকম্পসহ সব ঝূঁকি প্রতিরোধের বিষয় মাথায় রেখেই রাশিয়ার আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপদনের ক্ষমতার এই প্রকল্পটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।