ঘোষণার আগে রায় প্রকাশ দুঃখজনক

international crime tribunal আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার আগে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশের ঘটনা দু:খজনক বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

একই সময় ট্রাইব্যুনাল আরো বলেন, রায় প্রকাশের পেছনে দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্র এবং বড় ইনভেস্টমেন্ট কাজ করেছে। এসব ঘটনা ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করার হীন চেষ্টা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিএনপির আইনজীবী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের বিরুদ্ধে স্বপ্রনোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু আবেদন করার পরে ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এসব মন্তব্য করেন।

বুধবার সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেনের করা মন্তব্যের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান (এটিএম ফজলে কবীর) প্রায় ৩২ বছর ধরে বিচার কাজ পরিচালনা করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি না হয় সামান্য ছোট একজন জাজ। কিন্তু এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ অন্য সদস্য বিচারপতি তো এতো ছোট নন। আমাদের দেওয়া বিগত রায়গুলো পড়ে দেখুন। সাঈদীর সাহেবে বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়েছে, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়েছে তা পড়ে দেখুন ’

তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রণালয় থেকে রায় প্রকাশ হওয়ার যে ঘটনা প্রকাশ হয়েছে; তার পিছনে বড় ধরনের ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে। এটা এক ধরনের ষড়যন্ত্র। এ ধরনের ঘটনাকেদু:খজনক বলেও উল্লেখ করেন তিনি ।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি সব সময় কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলি। আমাদের তো সব জায়গায় কথা বলা যায় না।আমাদের যা বলার তাই ট্রাইব্যুনালে বসেই বলতে হয়।’

এ সময় তিনি চ্যানেল-২৪ এর টকশোর বিষয়টি টেনে বলেন, ‘তারা কিভাবে বিচার নিয়ে কথা বলেন।’

তিনি বলেন, ‘বিচরপতি শামীম হাসনাইন একজন সিনিয়র সিটিং বিচারপতি। তার বিষয়ে আমরা কিভাবে সমন জারি করি। তারপরও আমরা তার বিষয়ে বলেছি; তিনি আসলে সাক্ষ্য গ্রহণ করবো। কিন্তু তার বিষয়ে সমন জারি করতে পারি না।’

এরপর প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, গতকাল রায় ঘোষণার পর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী, ছেলে ও আইনজীবীরা কতগুলো জাজমেন্টের বান্ডিল হাতে নিয়ে মিডিয়ার সামনে প্রচারণা চালিয়েছেন, রায় আগেই প্রকাশ হয়ে গেছে।

এ ধরনের প্রচারণা চালানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।

এ সময় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আপনারা লিখিত আবেদন করেন আমরা বিষয়টি দেখবো।’

বুধবার সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পরে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেন,  ‘এই বিচারটি একটি প্রহসনের বিচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিচার। ইনশাল্লাহ জাতীয়তাবাদী শক্তি যদি ক্ষমতায় আসে, সত্যিকার অর্থে যারা যুদ্ধাপরাধী, তাদের বিচার হবে এবং নির্দোষ ব্যক্তিরা প্রতিহিংসার জন্য যাদের বিচার করা হয়েছে, কাল্পনিক গল্প দিয়ে যে মামলা তৈরি করা হয়েছে, অবশ্যই সেটা চলে যাবে। যারা এ প্রহসনের বিচারে সম্পৃক্ত , ইনশাল্লাহ বাংলার মাটিতে তাদেরও বিচার হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চাই,  রাজনৈতিক প্রতিহিংসার না ।  তিনি আরো বলেন,‘আমরা দেখতে পাচ্ছি-সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ন্যায় ব্যক্তি, যার বাবা ৭২ সালে সেন্ট্রাল জেলে দালাল আইনে আটক ছিলেন। তখন তার ছেলের নাম ছিলে না। দীর্ঘ ৪০ বছর পর তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়।’

খন্দকার মাহাবুব হোসেন আরো বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। তার পক্ষে

একজন বিচারপতি সাফাই সাক্ষী দিতে আগ্রহী হলেও তাকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ